চৈতী
– বিচিত্র কুমার
চৈতী, তোকে বড্ড ভালোবাসি
কি করে যে মুখফুটে তা বলি,
বইছে উতাল-পাতাল চৈতী হাওয়া
এখনো কী ফোটেনি প্রেমের কলি?
এসো ঝিরিঝিরি মৃদু বাতাসে বসে
দুজনে মনের কথা খুলে বলি,
আচ্ছা কোন গাছেতে ফোটে জানো
রঙিন প্রেমের কলি?
বুলবুলিরা ফুলপরীরা আমায় দেখে হাসে
বলে পাগল নাকি মাথায় ব্যামো আছে?
কি যে করি ভাবছি আমি-
বুঝায় কারে এই পাগল মন,
মিষ্টি একটা প্রেম করিব
এই করেছি আমি পণ।
রঙ মেখেছে ঢং সেজেছে
ঐ নীল আকাশে পরী,
ইচ্ছে করে ছুটে গিয়ে
তার হাতটাই এই বসন্তে ধরি।
বিয়ের ফুল
– বিচিত্র কুমার
কোন গাছেতে ফোটে জানো রঙিন বিয়ের ফুল?
বুলবুলিরা উঁকি মারে চেয়ে ছুলবুল।
ও পাখি তুই জানিস কি কেমনে ফুটে বিয়ের ফুল?
রঙের রানী প্রজাপতি রঙ ছিটিয়ে বলে,
ও ভাই যেদিন তোমার মনটা রঙেরঙে রঙিন হবে,
সেদিন তোমারও অঙ্গ শরীরে বিয়ের ফুল ফুটবে,
দোয়েল টিয়া ময়না শ্যামা তোমায় দেখতে আসবে।
কি করে যে মনটা আমি রঙিন করি বলো
শুনি সব মেয়েরিই প্রেম আছে নিভিয়ে গেছে আলো।
হঠাৎ এসব কথা শুনতে পেয়ে:
বৌ পাখিরা চুপিচুপি মুচকি হেসে বলে,
বিয়ের আগে সবারই তো একটু একটু প্রেম থাকে।
অপেক্ষা
– বিচিত্র কুমার
চাতকপাখির মতো তোমাকে চাইতে চাইতে;
রঙিন স্বপ্নগুলো অশ্রু জলে ঝরে গেছে:
বুকের গভীর থেকে।
এখন আর দুচোখের পাতায় রৌদ্র ঝিলমিল করে না:
মুক্ত আকাশের নীচে।
তোমার মুখশ্রীও আর আগের মতো মনে পড়ে না;
যেন জৈষ্ঠের কাটফাটা রৌদ্রে হৃদয় পুড়ে:
ময়দার ঝলসানো রুটির মতো ঝলসে গেছে।
তবু এ হৃদয় একটা বৃষ্টির প্রতীক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়;
একটা বর্ষামুখশ্রী দেখার জন্য,
একটা সত্যিকারের ভালোবাসা দেখার জন্য।
চারদিকে শুধু নদীস্রোতের কলকল ধ্বনি শুনি;
এখানে সেখানে জোরা মানিককেরা সাঁতার কাটে;
আবার হারিয়ে যায় দিনের শেষে।
আমি হয়তোবা এমন কোনো সম্পর্ক চাইনি
এজন্য একটা প্রেমিকাও যোগাতে পাইনি।
চাতকপাখির মতো তোমাকে চাইতে চাইতে;
হৃদয়ে জমানো রঙিন স্বপ্নগুলো অশ্রু জলে ঝরে গেছে:
এ বুকের গভীর থেকে।
তবু এক পলক সেই বৃষ্টির দেখা পাইনি।
সে
– বিচিত্র কুমার
সে আমাকে আর রঙিন স্বপ্ন দেখতে দেয় না;
শান্তিতে ঘুমাতেও দেয় না;
চিনা চিনা লাগে তবু পরিচয় অজানা।
এই বুকে ভালোবাসা দেয় না ধরা
চৈত্রের কাঠফাটা রৌদ্রের মতো বুকে চলছে খরা।
যে দিকে তাকাই দেখি শুধু তাকে,
স্বপ্নে হাতছানি দিয়ে সে শুধু আমাকেই ডাকে;
চমকে উঠে দেখি – সে;
কাছে নেই কাছে নেই ধূধূ মরুভূমি
কোথায় থাকো তুমি ওগো প্রিয়া মৌসুমি?
বলে না কোন কথা সে;
মনের গভীরের লুকানো ব্যথা যে
শুধু তাকিয়ে থাকে।
ফুল ফুটে ঝরে যায় নিরালায়
নব বসন্ত রঙ মাখায়।
হয় না শুধু তার সাথে দেখা যে
এই রঙিন ভুবনে।
কবি পরিচিতি

বিচিত্র কুমার। ১৯৯১ সালের ১৫ ডিসেম্বর,বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলাধীন খিহালী পশ্চিম পাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শ্রীঃ বিপুল চন্দ্র কবিরাজ তিনি একজন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক । মাতা শ্রীমতি অদিতি রানী কবিরাজ, তিনি একজন গৃহিণী। তিনি ২০০৮ সালে আলতাফনগর কে,এম,এ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি,২০১০ সালে, সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজ,বগুড়া থেকে এইচ এস সি এবং ২০১৪ ও ২০১৫ সালে সরকারি আজিজুল হক কলেজ,বগুড়া থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে(অনার্স) ও মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণী অর্জন করেন।
তার একক কাব্যগ্রন্থ: আমাদের দেশ (২০১৫ সালে প্রকাশিত)। তার যৌথ কাব্যগ্রন্থ সমূহ : অমর কাব্য গাঁথা, একমুঠো আলো, শত কবির কবিতা, আঁধারে আলোর রেখা, লাঙল, রক্তাক্ত আগস্ট, কাব্যগাঁথা বিজয়, জীবনের যত কাব্য, সূর্যসিঁড়ি তৃতীয় সংকলন, কবিকোষ-২, সেতু(সিঙ্গাপুর), উদীয়মান কবি, কবিকোষ-৩, দীর্ঘশ্বাসের কাব্য,মায়াবতী,ছড়া কবিতায় একুশ ও যাতনার রঙ।
এছাড়াও তার লেখা ভারত,যুক্তরাষ্ট্র,ইংল্যান্ড,অস্ট্রেলিয়া,ফ্রান্স,কানাডা সিঙ্গাপুর সহ দুই শতাধিক দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, আঞ্চলিক পত্রিকা, সাপ্তাহিক পত্রিকা,পাক্ষিক পত্রিকা, মাসিক পত্রিকা,সাহিত্য সংখ্যা, ম্যাগাজিন ও অনলাইন পত্রিকা, নিয়মিত প্রকাশিত হয়।