তীব্র গরম থেকে বাঁচতে হলে আমরা কী করতে পারি?
– যোষেফ হাজরা
বাড়ির বাইরে থাকলে কী করবেন?
যতই গরম থাকুক জীবিকার প্রয়োজনে আমাদের বাইরে কাজ করতে যেতে হয়। এই প্রচন্ড গরমে হিট স্টোকে প্রাণ যাচ্ছে অনেকের। তাই যতটুকু সহজে ও সংক্ষেপে পারা যায় বাইরের টিকে থাকার কৌশল আপনাদেরকে অবগত করা হল-

১. ছাতি বা বড় হ্যাট (টুপি) ব্যবহার করবেন।
২. সাদা বা হলুদ রঙের বা যতটা সম্ভব হালকা রঙের জামা পরবেন। কালো ও গাঢ় রঙের জামা বেশি তাপ শোষণ করে। এবং সুতি কাপড় পরুন।
৩. যথেষ্ট ঠান্ডা পানি পান করবেন। মাথায় পানি দিবেন, হাত-পা ধুয়ে নিবেন, মসজিদে ওজু খানাতে পানি পেয়ে যাবেন। এছাড়া বড় শহরের শপিং মলেও এসির ঠান্ডা বাতাস খেয়ে নিতে পারেন।
৪. বেশি ঘাম হলে স্যালাইন বা ঠান্ডা ডিংক্স(সোডা)পান করবেন। তবে শিশুদের অতিরিক্ত ঠান্ডা দিবেন না।
৫. গাছের ছায়াতে বা ঠান্ডা বাতাসে মাঝে পারলে দাঁড়িয়ে দেহ ঠান্ডা করে নিবেন।
৬. ছোট মুভএবেল ফ্যান পাওয়া যায় সেগুলি ব্যবহার করতে পারেন বা হাত পাখা রাখতে পারেন। তাল পাতার পাখাতে বেশি ঠান্ডা বাতাস হয়, না হলে যেকোন কিছু ব্যবহার করতে পারেন, এমনকি খাতাও।
৭. ফ্রিজ থাকলে পানির বোতলে ভেজা টিসু জড়িয়ে পনের মিনিটের জল বরফ ঠান্ডা করতে পারা যায়, আরেকটু বেশি সময় রাখতে বরফ করে সেই পানি বহন করতে পারেন।
৮. কোন বিষয়ে ব্যস্ততা না দেখিয়ে আগে শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ করে তারপর কাজ করুন। আগে জীবন পরে কাজ।
৯. শিশুদের স্কুলে যাওয়া নিয়ন্ত্রণে রাখুন। নিষেধ করার কথা বলা আইন বিরোধী। তবে তীব্র গরমে এলাকা বিশেষে স্কুল ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।
১০. বৃদ্ধ, অসুস্থ, শিশুদের না পারলে ঘরের বাহির করবেন না।

বাড়ি থাকলে কী করবেন?
১. ঘন ঘন পানি ও স্যালাইন ও ঠান্ডা জল বা শরবত খেতে পারেন।
২. দিনে তিন/চার বার গোসল করবেন।
৩. সবুজ শাক সবজি, তিতা ও টক জাতীয় খাবার খাবেন।
৪. কাজ কমিয়ে এনে গাছের নিচে অবস্থান করুন।
৫. হালকা পোষাক পরুন।
৬. বাজার ও রান্না কাজ যতটা সম্ভব দিনে গরম হবার আগে করুন।
৭. শিশুদের ঘরের বাইরে বের হতে দিবেন না।
৮. বিছানায় ঘুমানোর জন্য শীতল পাটি ব্যবহার করতে পারেন।
৯. পুকুরের পাড়ে জলের ধারে ঠান্ডা বাতাস বেশি পাবেন। ঘন জঙ্গল থাকলেও তার নিচে ঠান্ডা থাকে, বাতাসের বয়ে যাক বা না যাক।
১০. এছাড়া কাঁচা আম, তেঁতুলের মাখা খেতে পারেন। ফল জাতীয় জিনিস বেশি খাবেন। কিন্তু তরমুজ এড়িয়ে যাবেন, কারণ তরমুজ খেলে শরীর গরম হয়। তবে কাঁচা ঝাল খেতে পারেন।
১১. মাটির পাত্রে জল রাখলে ফ্রিজের মত ঠান্ডা থাকে। এটাও করতে পারেন। মাটির পাত্রে জল রেখে ঠান্ডা করে খাওয়ার অনেক গুণ।
শিশুদের জন্য যা করবেন?
১. তাপমাত্রা চল্লিশ ডিগ্রি বা তার উপরে গেলে শিশুদের ঘরের বাইরে যেতে দিবেন না।
২. ঘরের মধ্যে থেকেও যেন খুব ছুটি না করে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
৩. খুব ঠান্ডা জল খেতে দিবেন না।
৪. খুব ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে দিবেন না।
৫. ভাজা/পোড়া/চিপস্ খাওয়া থেকে দুরে রাখুন এবং ফ্রেস খাবার ও ফলমূল খাওয়ান।
৬. তাদের হাল্কা রঙের ও সূতির জামা কাপড় পরান।
এছাড়া এখন কোন ভাবেই গাছ লাগাতে যাবেন না। বরং বিকালে গাছে পানি দিয়ে গাছ বাঁচানোর চেষ্টা করেন। বর্ষাকালে গাছ লাগাবেন। আর বিশেষ করে মেহগনি ও ইউকেলিপটাস/একাশিয়া বা রেইন ট্রি থাকলে কেঁটে ফেলুন। রেইন ফরেস্টের এই গাছ রেইন ফরেস্টে অত্যাধিক পানি শোষণ করে টিকে থাকে যা আমাদের দেশের জন্য ক্ষতিকর।
সতর্ক থাকুন সুস্থ থাকুন।

পরিচিতি

যোষেফ হাজরা। ছদ্ম নাম তারুণ্যের কবি।
আমি আমার জীবন গঠনের সময় বহু জায়গার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছিলাম। শহরের হাওয়া বা মফসলের জীবন এমনকি উত্তর আর দক্ষিণাঞ্চলের জীবনধারার ছোঁয়া আমি হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করেছি। আমার জন্মস্থান মোংলার স্বনামধন্য সেন্ট পলস হাসপাতালে। ১লা মে জন্ম হাওয়ায় ফাদার মারিনো রিগন আমার নাম যোষেফ (আধুনিকায়নে যোসেফ) রাখে। পিতা তাপস হাজরা, মাতা এন্ড্রো রিনা নাথ।
আমি প্রথম যখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “আমাদের ছোট নদী” কবিতা পড়ে তার সম্পর্কে জানি তখন থেকেই তিনি আমার অনুপ্রেরণা। এ জন্য চিত্রকলা, সংগীত, আবৃত্তি, অভিনয় ও পরবর্তীতে সেন্ট পলস স্কুলের লাইব্রেরি ও বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের অপার সুযোগে লেখালেখির হাতে খড়ি দেই। সকল শিল্প-সংস্কৃতি থেকে আমি লেখালেখি করতে বেশি ভালবাসি। কারণ মনের কথা সম্পূর্ণরূপে ব্যক্ত করে, ভাষার জাদুকারিত্বে, জ্ঞান ও দর্শনের যে সমন্বয় হয়, সেই আত্মদর্শনে সম্পূর্ণ আত্মতৃপ্ত করতে সক্ষম। আমি যদিও রবীন্দ্রনাথকে গুরুদেব মানি তবুও তার ধাঁচে আমি লিখি না। আমি কাব্য ও রচনায় অন্যান্য ঢং রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করি যাতে কেউ পড়ামাত্রই বুঝতে পারে এই লেখনীর স্রষ্টা কেবলমাত্র আমি।