পাগল
– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ
তোমরা আমায় বললে পাগল
আমার কী যায় আসে
চাদকে মেঘ করলে আড়াল
তবু সে চাঁদ হাসে।
চেওখের আড়াল যে ফুল ফোটে
সুবাস তাহার ঠিকই ছোটে।
ভুল করিয়া যদি অলি
নাইবা ফুলে বসে।
তোমরা আমায় বললে পাগল
আমার কী যায় আসে।
জাতি-ধর্মের ধার ধারি না
তাইতো এ গান গাই
ধনী-গরীবে নেই ভেদাভেদ
সবে ডাকি ভাই।
এই পৃথিবী স্বর্গ হবে
মানুষ যেদিন মানুষ হবে
সবল যেদিন ভাই মেনে
দাঁড়াবে দূর্বল পাশে।
তোমরা আমায় বললে পাগল
আমার কী যায় আসে।
গানের পাখি
– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ
গানের পাখির কন্ঠে যেদিন
গান থামিয়া যাবে
ভুলে করিয়া সেদিন কি কেউ
পাখির নাম নেবে।
গানের পাখি গেলে বনে
ভুলে কি কেউ রাখবে মনে।
পাখির গাওয়া গানের কলি
হয়ত মনে রবে।
গানের পাখির কন্ঠে যেদিন
গান থামিয়া যাবে।
এসেছিলাম গান শুনাতে
শুনিয়ে গেলাম গান
হয়তো পারিনি জয় করিতে
তোমাদের সবের প্রাণ প্রাণ।
ক্ষমা চাহি ক্ষমা দিয়ো
আছো যত বন্ধু প্রিয়।
পাখি যেদিন হারিয়ে যাবে
গানতো পাখির রবে।
গানের পাখির কন্ঠে যে দিন
গানি থামিয়া যাবে।
দেহ
– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ
ভাবিস নে ক্যান তোর এ দেহ
পোকায় খুড়ে খাবে
মাটির দেহ আবার যেদিন
মাটির ঘরে দেবে।
জড়িয়ে দেহে রক্ত-পানি
দেখলি যদি দুনিয়াখানি
সেদিন তুই কেমনে ভুলিস
জবাব দিতেই হবে।
ভাবিস নে ক্যান তোর এ দেহ
পোকায় খুড়ে খাবে।
গোলাপ জলে স্নান করে
ইরানি আতর মাখো
বড় আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে
চেহারা তুমি দেখো।
এতই যতন করিস যাবে
মরার পরে কে-কি তারে।
তোর সাজানো দালান-কোঠায়
একদিন থাকতে দেবে।
ভাবিস কে ক্যান তোর এ দেহ
পোকায় খুড়ে খাবে।
দুঃখের দাহন
– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ
যে জন জানে দুঃখের দাহন
সে কি দুঃখ দেয়
তাই কি শিউলি কেঁদে কেঁদে
রাতেই ঝরে যায়।
বহে যখন চোখের নদী
ঢেউ সেথা থাকে না যদি
ভেঙ্গে চুরে মনের কূল
তাইতো করে ক্ষয়।
যে জন জানে দুঃখের দাহন
সে কি দুঃখ দেয়।
নদী জানে দুঃখের দাহন
তাইতো নিজে আসি
ভালো বাসুক নাই বা বসাক
সাগরে যায় মিশি।
নদী সম ত্যাগী হয়ে
পারলে প্রেম করো গিয়ে
তবেই হয়তো প্রেমের রাজ্যে
হবে তোমার জয়ায়।
যেজন জানে দুঃখের দাহন
সে কি দুঃখ দেয়।
কবি পরিচিতি

শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ। জন্ম অক্টোবর ২৭, ১৯৫৩ সালে বাগেরহাট জেলার মিঠাখালী গ্রামে। পিতা খাদেম আলী শেখ ও মাতা জয়নাব বেগম। মোংলা উপজেলার টাটিবুনিয়া স্কুল থেকে ১৯৬৮ সালে মাধ্যমিক এবং ১৯৭০ সালে বাগেরহাট সরকারি পি সি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ।
সহজ ও সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত এক বাউল কবি তিনি – কবির চিত্ত কাব্য সাধনার অনন্য এক ভূমি। তাই কিশোর বয়স থেকে যে লেখালেখির শুরু, জীবনের সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসে এখনো তাঁর কাব্য সাধনা চলেছে অক্লান্তভাবে। তাঁর লেখার মধ্যে প্রেম ও প্রকৃতিই প্রধান্য পেয়েছে সব সময়। ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে কয়েকটি কবিতার বই এবং দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সাময়িকীতে স্থান পেয়েছে তাঁর অনেক কবিতা। (মোবাইল – ০১৩২ ৯৭৩ ০০৯)