পারমিতা ব্যানার্জি – কবিতা (সুরে বাঁধা, ভুলোদের কথা, দাও বিদায়, হঠাৎ বৃষ্টি যখন, জীবন গাড়ি)

সুরে বাঁধা

– পারমিতা ব্যানার্জি

নানা ওঠাপড়ায়
আজও জীবন ছন্দময়।
জলতরঙ্গ বাজে সতত
তার গ্রন্থিতে গ্রন্থিতে!
সুরে যখন বিষাদ থাকে,
হারায় না তার ছন্দও।
কান্না সুখের এক স্রোত
বহমান নদীর সংঘাতে _
জীবন তবু এগোয়
গন্তব্য অজানা জেনেও!

ভুলোদের কথা

– পারমিতা ব্যানার্জি

ভুল করে
ভুল পথে চলে যায় কেউ।
তবু ভুলকে সাথে নিয়ে
বেঁচে থাকে আমরণ।
বারে বারে ভুল করে যারা,
তারাও যাপন করে
সুখের জীবন।
হয়তোবা আগামীতে
শোধরাবে__ এই আশায়!

এরই নাম বোধহয় জীবন!
কত না ভুল ভালবেসে,
‘ভুল সাথী’ সাথে নিয়ে
কেউ বাঁচে অনুশোচনায়!
তবুও সে বেঁচে থাকে।
বাঁচতে ভালবাসে।
কেন বাঁচে, তা জানেনা!
হয়তো ভুল করে!

দাও বিদায়

– পারমিতা ব্যানার্জি

লিখছে যখন ক্লান্ত মন_
ক্লান্ত কাগজ, ক্লান্ত কলম!
দিন শেষে রাত যে এলো,
রসদ তত এলোমেলো!
ছুটির ঘন্টা বাজছে যখন _
ক্লান্ত হয়ে ফেলছে চরণ!
এবার বুঝি যাওয়ার পালা!
পাত্তারিটা গুটিয়ে নিয়ে
চল রে ‘কবি’ তেপান্তর _
করিস না মন ঝালাপালা!

হঠাৎ বৃষ্টি যখন

– পারমিতা ব্যানার্জি

সকাল থেকেই
মেঘ জমেছিল আকাশময়।
বৃষ্টি অপেক্ষায় ছিল।
বেলায় এলো ক্ষণিকের বৃষ্টি।
সাগরের মন ছুঁয়ে গেল।
উপভোগ করলাম
ঢেউ আর বৃষ্টির উষ্ণ চুম্বন।
মেঘলা রঙে
রাঙলো বিস্তৃত জল রাশি_
অপরূপ এক আচ্ছন্নতায়
কাটলো কিছুক্ষণ।
সমুদ্র ও বৃষ্টির ভালোবাসায়
থাকলাম আমি।
যে সুখটা আড়াল ছিল,
জড়িয়ে নিলাম হঠাৎ মনে!

জীবন গাড়ি

– পারমিতা ব্যানার্জি

দুঃখ সুখের রস ঝরিয়ে
চলছে গাড়ি গড়গড়িয়ে
কান্না হাসির ছন্দ নিয়ে
মন হারিয়ে মন হারিয়ে!

বাদল যখন ঝমঝমিয়ে
কাদা মাখা পথ মাড়িয়ে
চলেই জীবন হড়হড়িয়ে
মন হারিয়ে মন হারিয়ে!

বৈতরণীর ঘাটেই গিয়ে
থামবে গাড়ি ছটফটিয়ে
পাড়ে শেষ গান শুনিয়ে
মন হারিয়ে মন হারিয়ে!


কবি পরিচিতি

পারমিতা ব্যানার্জি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার উত্তরপাড়ায় আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। পিতা স্বর্গীয় দাশরথি দাস, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। মাতা স্বর্গীয় মণিকা দাস গৃহবধূ ছিলেন। ছয় ভাই বোনের মধ্যে আমি চতুর্থ। বর্তমানে আমি আমার জীবন সাথী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্রী তমাল ব্যানার্জি, একমাত্র পুত্র পরন্তপ ও পুত্রবধু পৃথা সহ শ্বশুরালয়ে থাকি।

ছোটবেলায় বাবার অনুপ্রেরণায় ও মায়ের সাহচর্যে লেখালেখি, আবৃত্তি ও ছবি আঁকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে সংসারে জড়িয়ে পড়ে ছেদ পড়ে লেখায়। কুড়ি বাইশ বছর পর পুত্র পরন্তপের উৎসাহে নতুন করে কলম ধরা এবং বাংলা কবিতা ডটকমে যুক্ত হওয়া। এখানেই আমি নতুন করে খুঁজে পাই জীবন। এই কবিতার জগতে এখন চলছি এবং চলছি।