পারমিতা ব্যানার্জি – কবিতা (ঝংকারে, আমি বাঁচতে ভালবাসি, হেই সামালো, শরৎ পরশ)

ঝংকারে

– পারমিতা ব্যানার্জি

স্লোগানে স্লোগানে
যখন উত্তাল হয় রাজপথ,
শুনিনা দাবীর কথা
কিংবা কিসের প্রতিবাদ!!
হৃৎপিণ্ডের কম্পন
শুধু উত্তেজনা বাড়ায় _
হৃদয়ের ঝংকারে যেন
কত গান একসাথে বাজে!
মিছিল চলে যায়_
চলে যায় কত কথার ঝড়।
ওলোট পালট হয়
আমার ব্যর্থতা, আর জয়!
জানলার গ্রিলে
থাকে আমার মুঠো হাত,
সোচ্চার হওয়া হয় না আর!

আমি বাঁচতে ভালবাসি

– পারমিতা ব্যানার্জি

স্বপ্ন চোখে যখনই দেখি
বিশ্ব জয়ের হাসি।
এই মন বলে তখন
‘আমি বাঁচতে ভালবাসি’!

শ্রাবণ যদি চোখে নামে
দুঃখটা হয় বাসি!
মন যে তখন বলে
‘আমি বাঁচতে ভালবাসি’!

ভাঙা ঘরে ঘোর আঁধার,
খুঁজি পূর্ণ শশী!!
অন্ধ মন বলে ওঠে
‘আমি বাঁচতে ভালবাসি’!

হেই সামালো

– পারমিতা ব্যানার্জি

অপরাহ্ণ বেলায়
আকাশের আলসেতে
হেলান দিয়ে ক্লান্ত সূর্য!
আনমনা হয়ে ভাবছিল
রোজনামচা!
প্রতিদিন যেমনটি ভাবে।
কিংবা দিনলিপি
লিখে রাখে ঘরে ফেরা
পাখিদের পালকে!

আসমানি রঙ তখন
হারিয়ে যেতে বসেছে
সন্ধ্যার ফ্যাকাসে গল্পে!
ছায়াপথের
অজস্র নাটকের ভীড়ে
কে আর খবর রাখে _
আমাদের
একরত্তি সূর্যটার কাহিনী।
কেউ কী জানে _
সে যে বড্ড একা!!
নীরবে সামলায়
পৃথিবী সহ তার পরিবার!!

শরৎ পরশ

– পারমিতা ব্যানার্জি

শরৎ আসবে বলে,
শিউলি সাজিয়ে রাখে পথ।
শরৎ কি এলো?
আকাশে তুলোট মেঘের
বেহিসাবি আনাগোনা।
বাতাসে এখনো স্যাঁতস্যাঁতে
বর্ষার ঘোর!
হিমসিমে ভাদ্রের গুমোট ।
কেন যে দেরী করে শরৎ!!
কাশ ফুল দুলবে কখন
নদীর তীরে?
শরৎ আসবে বলে
অপেক্ষায় আজ প্রকৃতি!
শরৎ এলো _
তবুও শরৎ এলো কই??


কবি পরিচিতি

পারমিতা ব্যানার্জি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার উত্তরপাড়ায় আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। পিতা স্বর্গীয় দাশরথি দাস, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। মাতা স্বর্গীয় মণিকা দাস গৃহবধূ ছিলেন। ছয় ভাই বোনের মধ্যে আমি চতুর্থ। বর্তমানে আমি আমার জীবন সাথী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্রী তমাল ব্যানার্জি, একমাত্র পুত্র পরন্তপ ও পুত্রবধু পৃথা সহ শ্বশুরালয়ে থাকি।

ছোটবেলায় বাবার অনুপ্রেরণায় ও মায়ের সাহচর্যে লেখালেখি, আবৃত্তি ও ছবি আঁকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে সংসারে জড়িয়ে পড়ে ছেদ পড়ে লেখায়। কুড়ি বাইশ বছর পর পুত্র পরন্তপের উৎসাহে নতুন করে কলম ধরা এবং বাংলা কবিতা ডটকমে যুক্ত হওয়া। এখানেই আমি নতুন করে খুঁজে পাই জীবন। এই কবিতার জগতে এখন চলছি এবং চলছি।