কাশ কুমারী
– বিচিত্র কুমার
ইচ্ছে করে হারিয়ে যেতে কাশ ফুলের ওই দেশে;
স্নিগ্ধ হাওয়া খোঁপায় দোলে কাশ কুমারীর কেশে।
পাখির মতো হাওয়ায় উড়ে সাদা সাদা পরী;
মন চায় তাকে হাত বাড়িয়ে ভালোবাসাই ধরি।
কিন্তু তাকে পাইনা ছুঁতে জ্বলেপুড়ে মরি;
ইচ্ছে করে বলতে ডেকে – ওগো কাশ কুমারী।
তোমায় নিয়ে কাব্য লিখি আমি প্রেমের কবি;
রঙতুলিতে হৃদয় মাঝে এঁকেছি তোমার ছবি।
ইচ্ছে করে জানতে তোমায় এই শরতের দেশে;
কেমনে তুমি সুখে আছো আমায় দূরে রেখে?
নদীর বাঁকে পুকুর পাড়ে সুখেই কাটছে তোমার দিন;
তোমার কথা ভেবে ভেবে আমার বুকের মধ্যে করে চিনচিন।
এই শরতে যেই না তোমায় প্রথম দেখেছি;
বুকের মধ্যে ভালোবাসার ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখছি।
ওগো শরৎ রানী কাশ কুমারী রাখো না আমার কথা;
তোমার জন্য পাগল আমি আর দিও না ব্যথা।
অমনি শুনে হঠাৎ সে হারিয়ে গেলো সাদা সাদা মেঘে;
উড়ে উড়ে ঘোরে কাশ কুমারী পরীর ডানা পেয়ে।
ও পাষাণী
– বিচিত্র কুমার
ও পাষাণী দেখা দিয়ে হারিয়ে গেলি কই
বুকটা আমার খাঁ খাঁ করে কেমনে একা রই
দুচোখেতে ঘুম আসেনা তোর নামটা অজানা
কেমনে আমি সই।।
ও পাষাণী দেখা দিয়ে হারিয়ে গেলি কই।।
ইচ্ছে ছিলো বুকের ভিতর বাঁধব সুখের ঘর
ভালোবাসার পৃথিবীতে কেন হলি পর
বুকটা আমার করে শুধু এখন ধড়পড়
এ ব্যথা কেমনে আমি সই।
ও পাষাণী দেখা দিয়ে হারিয়ে গেলি কই।।
তুই কেন বুঝলি না আমি তোর দিবানা
ঘুম আসে না দুচোখ ঘুম আসে না
তোর মুখটা লাগে চিনা চিনা
বুকটা আমার খাঁ খাঁ করে কেমনে একা রই।।
বুকের ভিতর স্বপ্ন ছিলো রাখবো তোকে বেঁধে
হঠাৎ তুই দেখা দিয়ে আমায় গেলি কাঁদিয়ে
এ ব্যথা কেমনে আমি সই।
ও পাষাণী দেখা দিয়ে হারিয়ে গেলি কই।।
কেউ বললো না ভালোবাসি
– বিচিত্র কুমার
কেউ বললো না ভালোবাসি, উতলা যৌবনেও একা একা পথ চলি, কেউ বললো না ভালোবাসি;
কত না উড়ন্ত পাখি এলো গেলো, কেউ বাসা বাঁধলো না প্রেমে,
ওরা শুধু হাওয়া-টাওয়া খেতে চায় অনলাইনের মতো গেমে;
কোন প্রেমিকার অশ্রু ঝরে না দুই নয়নে।
কখনো আমি প্রেমযমুনায় সাঁতারও কাটতে পারিনি, দূরন্ত সব বন্ধুরা অনেক সাঁতার কেটেছে, চাঁদের বেশে নিশি, জোছনা, চাঁদনীর দেহ খেলেছে;
শুনেছি পৃথিবীর সব সুখ না কি ওইখানে পাওয়া যায়?
জোনাকিরা মিটিমিটি আলো জ্বালায়,
ঝিঁঝি পোকা গান গায়।
জীবনে একটাও সুখ পাখি পুষতে পারলাম না,
যদি উড়াল দেয় শুধু সেই ভয়ে, বন্ধুরা কতবার বললো একটাকে ধর না;
আমি কখনো ধরার সাহসই পাইনি, অন্ধপ্রেমের আঁধারিতে সময় নষ্ট করতেও চাইনি।
জানি পৃথিবীতে প্রেমের খুব কদর রয়েছে, ফুল ফোটামাত্রই ভ্রমরেরা গুনগুন করতে থাকে।
তাইতো আমি একা একা মন খারাপের দেশে-
কোন এক শরতের পড়ন্ত বিকালে ইচ্ছে নদীর তীর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম;
হঠাৎ দেখি একটা ফিলিংস পাখি, হরিণীর মতো টানাটানা দুটি আঁখি।
সে আমাকে দেখে মনের দরজা খুলে থমকে দাঁড়ালো,
জিজ্ঞেসা করলো আমি কেমন আছি? কি করছি? মা বাবা কেমন আছে? ইত্যাদি ইত্যাদি—?
মাঝে মাঝে যেটা ম্যাসেঞ্জারে সে জিজ্ঞেসা করে?
শুধু বললো না একবারও ভালোবাসি, এ জীবনে কেউ বললো না তোমাকে ভালোবাসি।
কবি পরিচিতি

বিচিত্র কুমার। ১৯৯১ সালের ১৫ ডিসেম্বর,বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলাধীন খিহালী পশ্চিম পাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শ্রীঃ বিপুল চন্দ্র কবিরাজ তিনি একজন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক । মাতা শ্রীমতি অদিতি রানী কবিরাজ, তিনি একজন গৃহিণী। তিনি ২০০৮ সালে আলতাফনগর কে,এম,এ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি,২০১০ সালে, সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজ,বগুড়া থেকে এইচ এস সি এবং ২০১৪ ও ২০১৫ সালে সরকারি আজিজুল হক কলেজ,বগুড়া থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে(অনার্স) ও মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণী অর্জন করেন।
তার একক কাব্যগ্রন্থ: আমাদের দেশ (২০১৫ সালে প্রকাশিত)।
তার যৌথ কাব্যগ্রন্থ সমূহ : অমর কাব্য গাঁথা, একমুঠো আলো, শত কবির কবিতা, আঁধারে আলোর রেখা, লাঙল, রক্তাক্ত আগস্ট, কাব্যগাঁথা বিজয়, জীবনের যত কাব্য, সূর্যসিঁড়ি তৃতীয় সংকলন, কবিকোষ-২, সেতু(সিঙ্গাপুর), উদীয়মান কবি, কবিকোষ-৩, দীর্ঘশ্বাসের কাব্য,মায়াবতী,ছড়া কবিতায় একুশ ও যাতনার রঙ।
এছাড়াও তার লেখা ভারত,যুক্তরাষ্ট্র,ইংল্যান্ড,অস্ট্রেলিয়া,ফ্রান্স,কানাডা সিঙ্গাপুর সহ দুই শতাধিক দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, আঞ্চলিক পত্রিকা, সাপ্তাহিক পত্রিকা,পাক্ষিক পত্রিকা, মাসিক পত্রিকা,সাহিত্য সংখ্যা, ম্যাগাজিন ও অনলাইন পত্রিকা, নিয়মিত প্রকাশিত হয়।