ক্রীতদাস
– নূরুল আযম মামুন
অভিশাপে দগ্ধ দুই মেরু।।
অভিলাষ, সুনীল শোভন আকাশ
আকাশের গাঢ় ভাজ।
জ্বীত বৃক্ষের নীচে মগ্ন মানসে
নাচে, সহস্র সন্যাস
জপে, যন্ত্রণার জৌলসে ভরা
আপন স্বভাব।
অন্ধকারে কে কাকে খুঁজে পায়।
যে যাকে পায় নিক, দিক
ধিক,
তবু
মানুষেরা শুধু প্রার্থনা করে যাবে
চিরকাল ..
অন্ধকার, প্রাচীন অশ্বত্থের নীচে
জন্ম নেয় আরো একটি শিশু,
জন্ম নেবে আরো অসংখ্য শিশু,
তবু
মানুষেরা শুধু নির্দেশ পালন করে যাবে
চিরকাল ..
অসম্পূর্ণতা
– নূরুল আযম মামুন
যন্ত্রের কোন যন্ত্রণা নেই।
আছে সময়ের সুনিপুন মাপকাঠি,
জয়ের উদ্যত বাসনা,
তাই চিৎকার করে।
মানুষের যন্ত্রণা, যন্ত্র না।
আছে সময়ের শৈল্পিক লেনদেন,
চাওয়া পাওয়ার সাধনা,
মৌনতায় দ্বদ্ধ হৃদয়।
মানুষেরা কতো সুখী।।
তবু ..
এতো চিৎকার কেন ভেতরে?
যন্ত্রের স্বভাবে বেড়ে ওঠা
দৈনন্দিন জীবন, মুক্তির বাসনায়
শুধু চিৎকার করে যায়।।
দক্ষিণ হাওয়া
– নূরুল আযম মামুন
যন্ত্রের হাতে হাত রেখে ছুটে যায় যন্ত্র।
পেছনে ধূপের মতো পুড়ছে দক্ষিণ
সোনালী ফসল, সোনালী গতর
পুড়ছে সাম্যের সবুজ বন্ধন,
সোনালী খামার।
জীবনের সাথে
মানুষের সম্পর্ক আর কতোটুকু,
কতোটুকু চাওয়া পাওয়া তার?
কতোটা নিবিড় মানুষ আর পৃথিবী?
একটা জীবনে-
মানুষ আর কতোটুকু হিসেবী হতে পারে,
কতোটা বেহিসেবী।
কার্তিকের কুসুম, শ্রাবণের বীজ,
নারীর মোহে থাকা বিনিদ্র কিছু রাত,
এইতো জীবন,
জীবন আর মানুষ।
এর চেয়ে বেশী কিছু কখনই হয়ে ওঠে না তার।
তবু শুধু প্লাবন নামে পিছে।।
খরার মতো নেমে আসে খাস জমির দ্বন্দ্ব।
তবু মানুষ
ছুটে যায় ঋণপুষ্ট শরীরের ঘ্রাণে
ঢিপুর শহরে।
সীমানা রুখতে গিয়ে
রুখে দাড়ায় বন্ধুর পথে।
সীমানা ভাঙ্গতে গিয়ে
ভেঙ্গে ফেলে ভাইয়ের পাজর।
পেটে পিঠে প্রাচীন বৈধতা নিয়ে ছুটে বেড়ায়।।
ছুটে যায় জীবন থেকে শরীরে,
শরীর থেকে যন্ত্রে
যন্ত্র থেকে জটিলতায়
একে একে ছুটতে শুরু করে সব।
ছুটে চলে জীবন,
মেধা
মনন
শ্রম
সরল সংস্কৃতি,
ছুটে চলে নারী।
একে একে সব হয়ে ওঠে আমার প্রিয় আদুরে অন্ধকার।।
মাটিতে লবন বাড়ে।
সোনালী গতরে জমে তিল।
সবুজ কুসুম পুড়ে পুড়ে জমা হয়
বিদেশী ব্যাংকে,
ঋণগ্রস্থ পড়ে থাকা আমাদের
চিরাচরিত দিন।
কবি পরিচিতি

নূরুল আযম মামুন। জন্ম – মার্চ ২১, ১৯৮০ পশ্চিম শেহালাবুনিয়া, মোংলা, বাগেরহাটে। পিতা মো: আমীর হোসেন (বরিশাল-পটুয়াখালি সেক্টর ৯-এর মুক্তিযোদ্ধা) ও মাতা নুরুন নাহার বেগম (গৃহিনী)। সংসারে চারভাই ও দুই বোনের মধ্যে বড় ভাই ও বড় বোনের পর তৃতীয়। সেন্ট পলস উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণি সমাপ্তি ও পরে চালনা বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এস এস সি অর্জন। মোংলা কলেজে এইচ এস সি ও সমাজ কল্যাণে ডিগ্রি পাস, শান্ত মারিয়ম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনলজি হতে গ্রাফিক ডিজাইন এন্ড মাল্টিমিডিয়াতে অনার্স এবং সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ-এ মাস্টার্স সম্পন্ন। বর্তমানে ব্রুনেই বিশ্ববিদ্যালয় লন্ডন-এ Digital Design and Branding বিষয়ে M. Sc. অধ্যয়ণ রত।
কর্মক্ষেত্রে একজন সুপ্রতিষ্ঠিত মোশন গ্রাফিক ডিজাইনার। বিভিন্ন মাল্টিমিডিয়া এবং চিত্র প্রদর্শনীতেও তাঁর শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয়েছে। আই ক্রিয়েশন লিমিটেড, দেশ টেলিভিশন, বৈশাখী টেলিভিশন, গ্রাফিক এসোসিয়েট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, কিন এন্ড ইয়াং টেকনোলজি (চায়না) – ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে মোশন গ্রাফিক ও থ্রিডি ডিজাইনে বিশেষ অবদান রেখেছেন কর্মসূত্রে। বর্তমান এটিএন বাংলা-তে মোশন গ্রাফিক ডিজাইনার হিসাবে কর্মরত।
মোংলার উত্তরণ পাঠাগারের সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। অবদান রেখেছেন মোংলা কলেজের দেয়াল পত্রিকা “মুক্ত প্রমিথিউস” প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এবং মোংলার উত্তরণ ত্রৈমাসিক ম্যাগাজিন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে।
মোংলা কলেজ এবং মোংলা পৌরসভার ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্ব পালনের ভিতর দিয়ে ছাত্র রাজনীতিতে বিশেষভাবে সংশ্লিষ্ট ছিলেন তিনি।
পুরস্কার – সর্বশ্রেষ্ঠ মোশন গ্রাফিক্স, ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত ডিজিটাল মিডিয়া ডিগ্রী প্রদর্শনী, ব্রুনেই বিশ্ববিদ্যালয় লন্ডন।