মো. মাহমুদ শেখ – কবিতা (সমুদ্রের পাড়ে, তাজমহল, ন্যায়ের প্রতীক, রং পুতুল খেলা)

সমুদ্রের পাড়ে

– মো. মাহমুদ শেখ

বহু জিনিস দেখেছি আমি
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ সমুদ্রের পাড়ে।
নৌকা, জাহাজ এসে সমুদ্রে
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ সবকিছু দেয় নেড়ে।

সোনা-রূপা, মৎস্য আছে
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ সবকিছুর দাম,
মণি-মুক্তা, ঝিনুক কুড়ায়
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ সমুদ্রের সুনাম।

বহু মানুষের জীবন নিয়েছে
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ জলোচ্ছ্বাস ও ঝড়ে,
দেখে আমি অবাক হয়েছি
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ সমুদ্রের পাড়ে।

তাজমহল

– মো. মাহমুদ শেখ

অর্জুমান্দ বানুর প্রাণপ্রিয়!
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ সম্রাট শাহজাহান,
তাহার সমাধির উপর করেন
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ তাজমহল নির্মাণ।

একশত ত্রিশ ফুট উঁচু আর
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ তিন’শ তেরো চওড়া
সাদা-কালো, মার্বেল পাথরের
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ দেয়াল নির্মাণ করা।

বিশ হাজার লোকে বাইশ বছরে
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ কাজটি করেছে পাকা।
নির্মাণ কাজে ব্যয় হয়েছে তাহার
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ প্রায় নয় কোটি টাকা।

কুরআন শরীফ উৎকীর্ণ করা
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ সামনেরই দেয়াল,
তাইতো বিশ্বে শ্রেষ্ঠ নিদর্শন
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ আগ্রার তাজমহল।

ন্যায়ের প্রতীক

– মো. মাহমুদ শেখ

কাব্যমাঠে উঠুক ভেসে কবিদলের নাম
কাব্যনদে বর্ষিত হয় আবেগ ভরা ঘাম।
কবিগণ নিত্য আসে নতুন সুরে ভেসে –
আশা ছড়ায় জগত মাঝে রবির মতো হেসে।
গা জ্বলে যায় কারো আবার সত্য বাণী শুনে
হৃদয় তাহার ভরে আছে উইপোকা বা ঘুণে।
সত্য ন্যায়ে অটল নেই যে, সে বা কেমন কবি!
জীবন্ত এক মানুষ হলেও সে, মূর্তির ন্যায় ছবি।
গানের কবি, ছড়ার কবি ও গদ্য কবি যতো
সত্য নিয়ে লেখুক তারা হাজার বছর শতো।
সমাজ জীবন, ব্যক্তি জীবন, রাষ্ট্র শাসন নিয়ে
শেষ করবে যশ কুড়াতে বিশ্বশাসন দিয়ে।
আগের যারা কবি লেখক সম্মান নিয়ে আছে
তাঁরাই ছিলো ন্যায়ের প্রতীক সুনাম দেশের কাছে।

রং পুতুল খেলা

– মো. মাহমুদ শেখ

অচেনা মানুষ চেনা পথের পরে দাঁড়িয়ে
কখনও যদি ডাকে হাত দুটি বাড়িয়ে-
তবে সে খুব পরিচিত মনে হয়,
হৃদয়ে তার কল্পনা জাগ্রত রয়।

আর যদি চেনা মানুষ চিনেও তাকায় না,
অভিমান, অভিনয় কিছুই তাতে বোঝায় না।
শুকনো হৃদয়ে না আসে বারিধারা
হৃদয় যমুনা সে তো আজ স্রোতহারা।

স্বপনের মতো সে এক জীবনের আল্পনা,
সফলতার ছোঁয়া পেলে, তাহাদের ছলনা।
জীবনের রঙিনতা পাওয়ার আগে-
চন্দন তারা সে নীরবে ভাগে।

এই তো জীবনের রং পুতুল খেলা-
সাদা জীবনে আসে তার নানাবিধ হেলা।


কবি পরিচিতি

মোঃ মাহমুদ শেখ। জন্ম ১৯৯৫ সালের ২৪ নভেম্বর খুলনা জেলার তেরখাদা থানাধীন ইছামতি গ্রামে। পিতা মোঃ আবুল হোসেন শেখ ও মাতা মমতাজ বেগম। নয় ভাই বোনের মধ্যে তিনি কনিষ্ঠ। শিক্ষা জীবনে তিনি স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন এবং বর্তমানে খুলনা সরকারি বি. এল. বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স শেষ বর্ষে অধ্যয়নরত। বৈবাহিক জীবনে তিনি এক কন্যা সন্তানের জনক। বর্তমানে তিনি কয়খা ইসলামিয়া মাদরাসা ও এতিমখানায় (কোটালিপাড়া, গোপালগঞ্জ) শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত আছেন।

ছোটবেলা থেকেই সাহিত্য চর্চা ও রচনার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আজও তিনি বিভিন্ন সাহিত্যিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ২০১৮ সালে “বর্ণ পরিচয় সাহিত্য পরিষদ” নামে তিনি নিজে একটি সাহিত্য সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। বিভিন্ন যৌথ কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বহু লেখা। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াকালীন সময়ে সর্বপ্রথমম রচনা করেন “সমুদ্রের পাড়ে” নামক একটি কবিতা। সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়েছে “আঁধারে ভরা জীবন” নামে কবির একটি একক কাব্যগ্রন্থ। প্রকাশের পথে রয়েছে কবির দ্বিতীয় একক কাব্যগ্রন্থ “বিষাদ স্মৃতি”।