সে যে একজন
– পারমিতা ব্যানার্জি
গানের সুরে
পেয়েছিলাম তাকে __
সে যে বিচ্ছিরি এক তারা!
ভর সন্ধ্যে বেলায়
নামতো সে চিলেকোঠায়।
খেলতো আমার সাথে।
আর তো
পাইনা খুঁজে তাকে।
কোথায় যেন হারিয়ে গেছে
হলুদ পাখির মতো।
সে আসবে কি আর ফিরে,
যখন সন্ধ্যা নামে নীড়ে।
সে যে আমার
বড্ড কাছের ‘ভালবাসা’!
ভুলিয়ে দিতো আমার যত
আগোছালো ব্যথা।
তবু বিরহে সে আনমনা,
বিচ্ছিরি একজন!
এমনই হয় বোধহয়
– পারমিতা ব্যানার্জি
এই তো সেদিন __
দেখেছিলাম সদ্য পাপড়ি মেলা
একটি ফুল!
নব রবির কিরণে
খুব উজ্জ্বল দেখাচ্ছিল তাকে!
কী এক কাব্যিক পেলবতা ছিল
পাপড়িতে।
অপরূপ ছন্দও ছিল।
শিশুর মতো হাসছিল তার চোখ।
খুব ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করছিল।
মনে হচ্ছিল সে যেন
অনেক দিনের চেনা আমার।
এমনকি সেই পরিবেশটাও…
আর আজ!!
বদলে গেছে সব কিছু কখন যেন!
বদলে গেছে আমার কবিতা।
আমার আদরের সাজানো কবিতা।
সার্কাস
– পারমিতা ব্যানার্জি
ব্যর্থতা ঢাকতে
মুখোশ পরতে হয় বারবার।
ভুল হয়ে যায়,
কোনটা ঠিক, মুখোশ না আমি!
এ যন্ত্রণার কোনো উপসম নেই।
হঠাৎ হাওয়ায়
ঝড় ওঠে শান্ত বাগানেও।
সঠিক পথ খুঁজে পাওয়া
খুবই কঠিন হয়ে ওঠে কখনো।
মরুভূমি কিংবা হিমবাহে
হাঁটতে হাঁটতে গন্তব্য হারাই।
একদিন বোধহয়
মুখোশটাই আসল হয়ে ওঠে।
কেউ যেন পিঠ চাপড়ে বলে,
“ব্রেভো”!
পথ চলতে চলতে মনে হয়
ব্যর্থতাই হয়ত সাফল্য!
শেষ খেয়ায়
– পারমিতা ব্যানার্জি
উষ্ণতায় কাঁপছে ভীষণ
আকাশ বাতাস মন।
উন্মনা তোমার আমার
বিরল সে সন্ধিক্ষণ!
ঝড়ের আভাস চতুর্দিকে
দেখায় যে অহঙ্কার!
তাণ্ডব উল্লাসে সে যেন
মহাপ্রলয়ের হুঙ্কার!
শেষ খেয়াটি অপেক্ষায়
করছে যে টলোমলো!
পারবে সে কী পৌঁছাতে
তোমার কাছে, বলো!
জীবন গাড়ি
– পারমিতা ব্যানার্জি
দুঃখ সুখের রস ঝরিয়ে
চলছে গাড়ি গড়গড়িয়ে
কান্না হাসির ছন্দ নিয়ে
মন হারিয়ে মন হারিয়ে!
বাদল যখন ঝমঝমিয়ে
কাদা মাখা পথ মাড়িয়ে
চলেই জীবন হড়হড়িয়ে
মন হারিয়ে মন হারিয়ে!
বৈতরণীর ঘাটেই গিয়ে
থামবে গাড়ি ছটফটিয়ে
পাড়ে শেষ গান শুনিয়ে
মন হারিয়ে মন হারিয়ে!
কবি পরিচিতি

পারমিতা ব্যানার্জি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার উত্তরপাড়ায় আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। পিতা স্বর্গীয় দাশরথি দাস, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। মাতা স্বর্গীয় মণিকা দাস গৃহবধূ ছিলেন। ছয় ভাই বোনের মধ্যে আমি চতুর্থ। বর্তমানে আমি আমার জীবন সাথী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্রী তমাল ব্যানার্জি, একমাত্র পুত্র পরন্তপ ও পুত্রবধু পৃথা সহ শ্বশুরালয়ে থাকি।
ছোটবেলায় বাবার অনুপ্রেরণায় ও মায়ের সাহচর্যে লেখালেখি, আবৃত্তি ও ছবি আঁকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে সংসারে জড়িয়ে পড়ে ছেদ পড়ে লেখায়। কুড়ি বাইশ বছর পর পুত্র পরন্তপের উৎসাহে নতুন করে কলম ধরা এবং বাংলা কবিতা ডটকমে যুক্ত হওয়া। এখানেই আমি নতুন করে খুঁজে পাই জীবন। এই কবিতার জগতে এখন চলছি এবং চলছি।