যদি হতো
– পারমিতা ব্যানার্জি
প্রতিদিন প্রতিরাত
কি করে যে কাটে!
হিসেব করি না তার
চুপচাপ বুক ফাটে।
মনে হয় ভুল সবই
মরীচিকার মতো!!
স্মৃতি আলো বুকে
বাঁচি তাই থতমত!
পেয়ে হারানো সুর
বাজে যে বারবার।
তবু অপেক্ষা করি
নতুন করে সাজার।
অগুণতি ভুলগুলো
মুছে যেতো যদি __
জীবনটা ভালবেসে
হ’তো পরিশ্রুত নদী।
নীরবে নিভৃতে
– পারমিতা ব্যানার্জি
নীরবে সহ্য করেছ
বহু ভালবাসার নির্যাতন!
অবশ্যই নির্দ্বিধায়
অনেক নির্যাস ঢেলেছ
অন্তরের শত সুগন্ধি ফুলের।
হয়তো পাও নি কিংবা
হয়তো চাও নি কিছুই__
তবুও প্রেম এসেছিল দূয়ারে।
ফিরেও গেছে অনাদরে।
তোমার শূন্য দৃষ্টি
কী এক বার্তা বয়ে আনে।
তোমার হাসি মুখের আড়ালে
তোমার লাঞ্ছনা ফুটেছে।
সহ্য করতে করতে
তুমি যেন এক প্রেম পাথর।
কিংবা পরিণতি!
পিয়াসী
– পারমিতা ব্যানার্জি
ভোরের নরম গালে
শীতের আদর মাখামাখি!
ঠোঁটে জমেছে কুয়াশার বিন্দু।
টুপ টুপ পড়ছে খসে
ভালবাসার মহাসিন্ধু!
এ যেন শীতের অভিবাদন।
ছেঁড়া আলোয় এলো ভোর!
শীতল ছোঁয়ায় ফুলের কেয়ারি
ভিজে একশা।
শিশির ভেজা ঘাসের
আড়মোড়া ভেঙে ওঠা যেন
একটা গল্পের মোড়!
একটু একটু করে
এগিয়ে যায় অসম্পূর্ণ কবিতা।
মণিকাঞ্চন
– পারমিতা ব্যানার্জি
আমি জানি না
ভালবাসা কাকে বলে।
জানি না বন্ধন কী!
তবু তুমি যখন সামনে আসো,
আমি অথৈ জলে ডুবি।
আমি চাইনি,
তবুও এনে দিলে কলস ভরা
স্বর্গীয় অমৃত।
ওসব আমার জন্য নয়।
আমি বসন্তের সুর বুঝি না।
তুমি যখন বাজাও
আমার হৃদয় হ’তে রক্ত ঝরে।
আমি ক্রমে এগিয়ে যাই
শেষের কবিতায়।
তবুও কেন যে
ভালবাসা কাকে বলে,
আমি বুঝি না।
পরশ পাথর
– পারমিতা ব্যানার্জি
মনটা জিনে, নাও গো চিনে মুক্ত সুখ।
নদীর টানে, যাও উজানে লব্ধ দুখ।
শালুক ফুলে, দুঃখ ভুলে ফড়িং নাচ।
চাঁদের কোলে, হাসি দোলে মন সাঁঝ।
পলাশ বনে, বাউল মনে উদাস গান।
মনটা হানে হৃদ্ কোণে বোমারু যান।
বসন্ত আঁকে জীবন বাঁকে মধুর রঙ।
শিমুল শাখে দোলা লাগে জনম ঢং।
কবি পরিচিতি

পারমিতা ব্যানার্জি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার উত্তরপাড়ায় আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। পিতা স্বর্গীয় দাশরথি দাস, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। মাতা স্বর্গীয় মণিকা দাস গৃহবধূ ছিলেন। ছয় ভাই বোনের মধ্যে আমি চতুর্থ। বর্তমানে আমি আমার জীবন সাথী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্রী তমাল ব্যানার্জি, একমাত্র পুত্র পরন্তপ ও পুত্রবধু পৃথা সহ শ্বশুরালয়ে থাকি।
ছোটবেলায় বাবার অনুপ্রেরণায় ও মায়ের সাহচর্যে লেখালেখি, আবৃত্তি ও ছবি আঁকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে সংসারে জড়িয়ে পড়ে ছেদ পড়ে লেখায়। কুড়ি বাইশ বছর পর পুত্র পরন্তপের উৎসাহে নতুন করে কলম ধরা এবং বাংলা কবিতা ডটকমে যুক্ত হওয়া। এখানেই আমি নতুন করে খুঁজে পাই জীবন। এই কবিতার জগতে এখন চলছি এবং চলছি।