জানলে না শুধু তুমি
– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ
তোমার অভাবে জীবন আমার
হয়ে গেছে মরুভূমি
আকাশ বাতাস জানলো চাঁদ
জানলে না শুধু তুমি।
আমার ব্যথায় ফুল কুমারী
করে থাকে মুখ ভারী।
মৃদুল বায়েও হাসে না তারা
যতই যায় চুমি।
জলের পদ্ম হাসে না আজ
আমার ব্যথার ভারে
বনছায়ে শুকনা পাতা
কাঁদিয়া কাঁদিয়া মরে।
সন্ধ্যাদীপ আকাশ ভালে
জ্বালে না আজ তারার দলে।
জানো কেনো ফাগুন হাওয়া
বহে থামি থামি।
দূর্বা গজায় পাথরের উপর
পাথরের মমতা পেয়ে
কস্তুরী রাখে নাভিতে হরিণ
আপন জীবন দিয়ে।
বাঁশির সুরে মন ভোলে
দুখের আনল আপনি জ্বলে।
বলতে পারো ফাগুন কেনো
বহে থামি থামি।
হৃদয় চিরিয়া
– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ
পারতাম যদি দেখাতে তোমায়
হৃদয় চিরিয়া
তবেই তুমি মানতে তখন
আমিই যে তোমার প্রিয়া
আমার প্রেম সকল সময়
তোমায় নিয়ে বাসর সাজায়।
তোমার অভাবে মরু বুকে
কাঁদিয়া মরে হিয়া।
আমার চোখের ভাষা তুমি
বুঝতে পারো না
তাইতো আমার গোপন প্রেম
তুমি মানো না।
জানতে যদি আমার জীবন
উঠতো কেঁপে তোমার ভূবন।
তখন তুমি খুঁজতে আমায়
হইয়া দেওয়ানা।
মাটি দিয়ে গড়া হৃদয়
তাই তো ফাটে না
ধাতুর হলে মনে রেখো
হইতো আটখানা।
বিধি যদি বাম না হতো
বুঝতে প্রেমের ওজন কতো।
ঠিকই তখন প্রেম দরিয়া
যাইতে পাড়ি দিয়া।
পারতাম যদি দেখাতে তোমায়
হৃদয় চিরিয়া।
ফাগুন হাওয়া
– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ
লোকের কথায় কী আসে যায়
বলুক যে যা বলে
ফাগুন হাওয়া ঘর ছেড়ে
তাই কি এলে চলে।
আসার পথে শীতের হাওয়া
কি বল্লো বলো না প্রিয়া।
তুমি না বললে আমিতো জানি
বল্লো ফাউল মুলে।
ঘর ছাড়িয়ে যাহার আশে
জাত-কুলমান ফেলে
আমি জানি লোকে তারে
বাউল বাউল বলে।
জানো কি তার কুলের খবর
জাত-অজাত না মুচি-মেথর।
কোন বিচার না করিয়া
নিশীথে এলে চলে।
এলেই যখন ভালই হলো
বাঁধব দুজন ঘর
কথা দিলাম কোনো দিনও
করবো নাকো পর।
দুঃখ-জ্বালা সবি ভুলে
থাকব দুজন সদা মিলে।
আসে যদি বৈশাখী ঝড়
যাবো নাতো ফেলে।
লোকের কথায় কী আসে যায়
বলুক যে-যা বলে।
কবি পরিচিতি

শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ। জন্ম অক্টোবর ২৭, ১৯৫৩ সালে বাগেরহাট জেলার মিঠাখালী গ্রামে। পিতা খাদেম আলী শেখ ও মাতা জয়নাব বেগম। মোংলা উপজেলার টাটিবুনিয়া স্কুল থেকে ১৯৬৮ সালে মাধ্যমিক এবং ১৯৭০ সালে বাগেরহাট সরকারি পি সি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ।
সহজ ও সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত এক বাউল কবি তিনি – কবির চিত্ত কাব্য সাধনার অনন্য এক ভূমি। তাই কিশোর বয়স থেকে যে লেখালেখির শুরু, জীবনের সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসে এখনো তাঁর কাব্য সাধনা চলেছে অক্লান্তভাবে। তাঁর লেখার মধ্যে প্রেম ও প্রকৃতিই প্রধান্য পেয়েছে সব সময়। ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে কয়েকটি কবিতার বই এবং দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সাময়িকীতে স্থান পেয়েছে তাঁর অনেক কবিতা। (মোবাইল – ০১৩২ ৯৭৩ ০০৯)