নিরন্তর
– সুমিত্র দত্ত রায়
সব ভুলে গেছি
মিথ্যে কথা,
স্মৃতিভ্রংশ না হলে।
বেশ ভালো আছি
মিথ্যে কথা,
বোধশক্তি না হারালে।
আর কিছু চাই না
মিথ্যে কথা,
গোপনতা না বাড়ালে।
অমৃতের স্বাদ চাই
সত্যি কথা,
অমৃতের পুত্র বলে।
ফিরতি পথে
– সুমিত্র দত্ত রায়
ফেরার পথে এখন
চড়াই কিম্বা উৎরাই।
দীর্ঘ পরিক্রমা শেষে
বহু গ্লানি, বহু ক্লেদে,
আজ ফিরতেই চাই।
চির আনন্দ সুধাতে
আছে আমার সন্ধান,
যদিও এখনো দূরে!
সেখানে অমৃত ভাণ্ড
আছে মরু প্রতীক্ষায়।
সব বাধা ও সব বিঘ্ন
নিমেষেই দূরে যাবে,
শুধু আকুলতা চাই।
তাই তো তার দিকে
আজই ফিরতে চাই।
স্বর্গের সিঁড়ি
– সুমিত্র দত্ত রায়
“এই যে দাদা!
বলতে পারেন,
স্বর্গে যাবার
পথটা কই?”
“পারবোই তো!
যান না দোকান
খান না ঠেঁসে
ন’সের দই,
আর শ’খানেক
ফুচকা খাবেন;
খান পঁচিশেক
টাটকা কই।
চিন্তা কি আর?
পৌঁছে যাবেন,
দেখুন কেমন
মানানসই।”
বিনিময়
– সুমিত্র দত্ত রায়
মূল্যবোধ স্বচ্ছ নয়,
বিনিময়ে শুধু বিপর্যয়।
হৃদয় চাপালে-
স্বাচ্ছন্দ্যে ঘাটতি,
সুখ চাপালেই-
মানবতা হ্রাস।
তুলাদণ্ড এদিক ওদিক;
আজীবন অবিরাম,
কখন কি ছাড়া যায়-
কতটুকুর বিনিময়ে,
তাই নিয়ে অনন্তকাল-
কালনেমির লঙ্কাভাগ।
শুধু ধাপে ধাপে সিঁড়ি;
একতারা ফেলে রেখে-
ওই পাঁচতারার দিকে।
পৌঁছানো দুস্কর আজ;
নিস্তরঙ্গ সাগর অতলে,
যেখানে হারিয়েও সুখ।
কবি পরিচিতি

সুমিত্র দত্ত রায় কবির ছদ্মনাম। প্রকৃত নাম সংকেত চট্টোপাধ্যায়।
আমি ছেলেবেলা থেকে ভাগীরথী কূলে বড় হয়েছি। আমার একাধিক লেখার প্রেরণায় গঙ্গার ভুমিকা অনেক। ওখানেই দেখেছি সূর্যাস্ত বা তৎকালীন মেঘরঞ্জনী। আদি বাড়ির কথা দিদির চোখে দেখা। বরিশালের শোলক গ্রামেই পিতৃভূমি ও বাটাজোরে মাতুলালয় ছিল। পিতা ঈশ্বর যোগেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মাতা ঈশ্বর বিজনবালা দেবী। পারিবারিক জীবনে স্ত্রী রুমা চট্টোপাধ্যায় আর এক কন্যা সপ্তদ্বীপা চট্টোপাধ্যায়। ভাই নেই। দুই দিদি, গীতা মুখার্জী আর অঞ্জনা মুখার্জি। পিতা যোগেশচন্দ্র ছিলেন দেশপ্রেমিক। বরিশাল হতে বন্দী হয়ে দমদম সেন্ট্রাল জেলে বদলি হন। তাঁদের রক্তে কিছুটা দুঃসাহসী আমিও ছিলাম। কিন্তু কবিতার জগত আমার নিজস্ব মনে হত সেই দশবছর বয়সেই। আবৃত্তি, গান, ছবি আঁকা আমার খুবই পছন্দসই ছিলো। চাকুরিজীবী ছিলাম। এলাহাবাদ ব্যাংকে আধিকারিক। বদলির চাকরি। তাই ২০১২ সালে স্বেচ্ছায় অবসরের পর বাংলা কবিতা ডটকমে লেখা শুরু, আমার কন্যাপ্রতিম সোমালীর হাত ধরে। আর পিছু ফিরে তাকাই নি, এখন ওটাই ধ্যান জ্ঞান।