চলো যাই
– বিভূতি দাস
চলো যাই মহাকাশে অনেক দূরের পথে
ধরা যাক বাড়ি থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার হবে
খুঁজতে বিগব্যাং-এর পরের অবস্থার অজানা অতীতকে
অবশ্য এখনো ঠিক জানি না কতটা জানা যাবে
আগে যে গিয়েছে, সেও আছে ৬২৫ কিলোমিটার দূরে
তবে এই যাত্রার শেষ দ্বিতীয় লাগ্রাঞ্জে
বুঝলে না তো! লাগ্রাঞ্জ হল একের আকর্ষণ
অন্যের আকর্ষণকে যেখানে শূন্যে আনবে।
আইনে বলে (ট্রায়োলেট)
– বিভূতি দাস
আইনে বলে, আইন নিজের হাতে নিতে না
হুঁশ হারিয়ে সময়ে, জনগণ কি তা মানে
প্রবল আবেগে ধোলাই দিতে সময় নষ্ট করে না
আইনে বলে, আইন নিজের হাতে নিতে না
দুষ্কৃতী দুষ্কর্ম করে, আইনের সুরক্ষা পাবে জানে
ধোলাই দিলে, দুষ্কৃতীর অভিযোগও স্বীকৃত আইনে
আইনে বলে, আইন নিজের হাতে নিতে না
হুঁশ হারিয়ে সময়ে, জনগণ কি তা মানে।
সিঁদ (ট্রায়োলেট)
– বিভূতি দাস
কাঁচা মাটির ঘরে থেকেও মন ঘিরেছি শক্ত বেড়ায়
সিঁদ কেটে সব নিলেও খোঁজ পাবিনে মনের ধনে
যতন করে রেখেছি তারে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের শক্ত ডেরায়
কাঁচা মাটির ঘরে থেকেও মন ঘিরেছি শক্ত বেড়ায়
আনিনে কিছুই আসার সময়, থাকতে প্রবাস কটা দিনে
ছুটি কাটিয়ে ফিরব ঘরে, হাত দুলিয়ে সুখের গানে
কাঁচা মাটির ঘরে থেকেও মন ঘিরেছি শক্ত বেড়ায়
সিঁদ কেটে সব নিলেও খোঁজ পাবিনে মনের ধনে।
হুটার
– বিভূতি দাস
হুটার বাজিয়ে কারা কারা যাও, একসাথে গাদাগাদি করে
পিছে ফেলে সব জৌলুস, ধর্ম বর্ণের গোঁড়ামি না ধরে
কালো পলিথিনে বাঁধা আমির গরীব কিছুতেই নেই ভেদ
ভুলে গেলে সব এত তাড়াতাড়ি, অহং ঘৃণার হল বিচ্ছেদ!
নেই ফুল মালা, আতরের সৌরভ, স্বজন নেই কারো সাথে
পছন্দ অপছন্দের ঘুচিয়ে ফারাক মিলেগেলে কোন অজুহাতে
হাঁকডাক নেই মোল্লা পুরুতের, নেই আচার বিচারের শাসন
মাটিতে আগুনে বিরোধ নেই, ভেদহীন প্রেমে পাতা আসন।
সম্ভব হলে জানিয়ে যেও, আছে যার যত উত্তরাধিকার
সত্য একটাই জনম মরণ, বাকি সব মেকী, মিথ্যাচার
একসাথে বাঁচা ঘেঁসাঘেঁসি থাকা অমূল্য সম্পদ মানবতার
স্বার্থে ভিন্ন করেছে মানুষ, বুদ্ধিমানের কৌশল বোকা বানাবার।
লোকে বলে (ট্রায়োলেট)
– বিভূতি দাস
লোকে বলে, সুখ ভাগ করে নিলে বাড়ে তা বহুগুণে
চেয়ে খেলে পিত্তি পড়ে না, এ কথাও যায় শোনা
দুঃখের বেলায় কি হয়! একথা জাগে কি কোন মনে
লোকে বলে, সুখ ভাগ করে নিলে বাড়ে তা বহুগুণে
আত্মীয় পরিজন বন্ধু হিতৈষী সময়ে সকলি হয় চেনা
দুঃখের ভাগ আমাদের ও দিস, এ কথা কেউ বলে না
লোকে বলে, সুখ ভাগ করে নিলে বাড়ে তা বহুগুণে
চেয়ে খেলে পিত্তি পড়ে না, এ কথাও যায় শোনা।
কবি পরিচিতি

বিভূতি দাস। অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক। জন্ম ১৪ই ফেব্রুয়ারী, অভিভক্ত ২৪ পরগনার কৃষক পরিবারে।
প্রকৃতির কোল ছুঁয়ে গ্রামে বেড়ে ওঠা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। ছাত্রাবস্থা থেকেই সৃষ্টির সাথে প্রেম। নেশা-লেখালিখি এবং ভ্রমণ। বর্তমান নিবাস – সোনারপুর, কলকাতা –৭০০ ১৪৯, ভারত।