ভাব গভীরে
– পারমিতা ব্যানার্জি
তুমি ভালো, আমি ভালো
সবাই ভালো থাক্।
সুখে বৃষ্টি অঝোর ঝরুক,
অসুখ ধুয়েই যাক্।
ভালবাসার গভীর নীতি
রাজনীতি না বোঝে।
সূর্য ও চন্দ্রের প্রেমের ব্যথা
কুয়াশা-মন খোঁজে।
বনানীর সে সবুজ পাতায়
অবুঝ মনটা আঁকা।
মরুভূমির ঐ মরীচিকায়
সহজ প্রেমও বাঁকা।
তবু সবাই থাকুক ভালো
সুখটা ছেঁকে নিয়ে।
হাঁটুক জীবন ঘাসে ঘাসে
ভালবাসা বিছিয়ে॥
বসন্ত বেলায়
– পারমিতা ব্যানার্জি
ফাগুন এলো ওই …
বাতাসে আজ বসন্তের
গন্ধ যে থৈ থৈ _
আমার সাথী আমগাছে
ধরেছে যৌবনের মুকুল!
বউল গন্ধে মেতেছে
আমার উঠোন, বাড়ি।
গাছে নানান পাখির বাস।
ওরাই আমার সই _
ফাগুন এলো ওই…
ও কোকিল,
তুই একলা ডাকিস, কুহু,
সঙ্গী গেল কই?
কোকিলার কী ইচ্ছা করে
বাঁধতে বাসা ঘর!
ভাগ্য তার এমন কেন _
পরের বাসায় রাখে ডিম,
ছানা যে হয় পর।
ফাগুন এলো ওই..
বনে বনে রঙের মাতন,
উৎসবের হৈ চৈ _
হৃদয়ে হৃদয়ে দেয়া নেয়া,
এই বসন্ত-বেলায়।
ফাগুন যে আজ মুখরিত
প্রেমের গানে গানে _
বসন্ত বাতাস ছড়িয়ে যায়
ভালবাসার মানে!
একটি মুহূর্ত
– পারমিতা ব্যানার্জি
কিছু মুহূর্ত আছে,
যাকে ভোলা সম্ভব নয়!
আমার হাতে সেই স্পর্শ _
হৃদয় ছুঁয়ে গেছে!
ভাললাগার গন্ধ পাই এখনও।
ভোলা কি সম্ভব!
অনেকে বলে _
“যে হাত ছেড়ে চলে গেছে,
কেনই বা মনে রাখো সেই ছোঁয়া!”
হাত বহুবার ধুলেও যায় না অনুভূতি।
আমি চেষ্টা করি ভোলার _
পারি কই?
অজুহাত আমি শুনিনি _
ভাগ্য বিশ্বাস করি না _
হয়তো সেই ‘মুহূর্ত” গেঁথে গেছে
আমার পথে।
তবু আমি নিশ্চিত _
সেই মুহূর্ত তোমার মনেও
ঘুমিয়ে আছে।
বসন্ত ঝরে যায়
– পারমিতা ব্যানার্জি
হার্ডল রেস এ পেরিয়ে গেলাম
অনেকগুলো বসন্ত!
কখন যে পৌঁছে যাবো_
শেষ দড়িটা ছোঁব _
জিতবো দু হাত তুলে!
নিরালায় তাই তো বসে ভাবি।
পড়ন্ত বিকেল বলে, থামো এবার।
তবুও জীবন ছিপটি হাতে
ছুটতে বাধ্য করে।
ফাগুন এলেই বসন্তরা
একটা একটা ঝরে!
বোঝে না কেউ, বাড়ছে কত ঋণ!
তবুও কেন লোকে বলে _
“শুভ জন্মদিন”!
হে কবি জাগো
– পারমিতা ব্যানার্জি
এখনই ঘুমিয়ে পড়ো না কবি।
তোমার চলার পথের
অনেক যে বাকি।
অনেক দিতে হবে তোমায় _
তুমিই তো পথ দেখাও _
হয় যেন ভবিষ্যতের বাণী
তোমার সৃষ্ট কবিতা!
কবি, ঘুমিয়ে পড়োনা এখনই।
তুমি যুদ্ধ করতে পারো
তোমারই লেখায় _
তুমিই মুক্তি আনতে পারো_
সংহার থামাও অবলীলায়!
তুমি কলম সৈনিক হয়ে
থামাতে পারো বিশ্ব যুদ্ধ!
এখনই ঘুমিয়ে পড়ো না কবি।
অনেক কাজ যে বাকি!
তোমার ডাকে বসন্ত আসে,
মন থেকে মনে _
জেগে ওঠে ভালবাসা।
তোমার লেখার অপেক্ষায়
হাজার হাজার মানুষ!
তোমার কবিতার পংতিরা
সৌহার্দ্য বিলোয়!
এখনই ঘুমিয়ে পড়ো না কবি।
ঝরলো খুশি
– পারমিতা ব্যানার্জি
বৃষ্টি এলো বৃষ্টি এলো
অনেক দিনের পরে।
অপেক্ষাতে ছিল যারা
আনন্দেতে গান ধরে।
তাদের মধ্যে অন্যতম
কোলা ব্যাঙের ছা!
গাল ফুলিয়ে বলছে সে
আহারে বাহারে বাঃ!
আরো খুশি চাতক পাখি
জল খায় প্রাণ ভরে।
বৃষ্টি বলে, এলামই তো,
ঝরতে অঝোর ঝরে!
কবি পরিচিতি

পারমিতা ব্যানার্জি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার উত্তরপাড়ায় আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। পিতা স্বর্গীয় দাশরথি দাস, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। মাতা স্বর্গীয় মণিকা দাস গৃহবধূ ছিলেন। ছয় ভাই বোনের মধ্যে আমি চতুর্থ। বর্তমানে আমি আমার জীবন সাথী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্রী তমাল ব্যানার্জি, একমাত্র পুত্র পরন্তপ ও পুত্রবধু পৃথা সহ শ্বশুরালয়ে থাকি।
ছোটবেলায় বাবার অনুপ্রেরণায় ও মায়ের সাহচর্যে লেখালেখি, আবৃত্তি ও ছবি আঁকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে সংসারে জড়িয়ে পড়ে ছেদ পড়ে লেখায়। কুড়ি বাইশ বছর পর পুত্র পরন্তপের উৎসাহে নতুন করে কলম ধরা এবং বাংলা কবিতা ডটকমে যুক্ত হওয়া। এখানেই আমি নতুন করে খুঁজে পাই জীবন। এই কবিতার জগতে এখন চলছি এবং চলছি।