বুকের দিঘি
– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ
বুকের দিঘি আনমনা জল
ব্যথার পদ্ম দোলে
তুমি নাই পাশে শুধু তুমি নাই
পোড়ামন কেনে বলে।
শরতের মেঘ ভেসে ভেসে যায়
হয়তো হারানো প্রিয়ার ঠিকানায়।
নয়নের জল নীরবে কেঁদে
না বলা কথা বলে।
বুকের দিঘি আনমনা জল
ব্যথার পদ্ম দোলে।
নিছিদ্র আঁধার ডানা ঝাড়ে
ব্যথার বালুচরে
ব্যথার বালু উড়িবার চায়
ব্যথার সীমানা ছেড়ে।
আশার তরী হয় না বোঝাই
শূন্যতা নিয়ে তোলে যেনো হাই।
অতৃপ্ত মন খুঁজিয়া ফেরে
না পাওয়ার অশ্রু ফেলে।
বুকের দিঘি আনমনা জল
ব্যথার পদ্ম দোলে।
মিনতি
– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ
তোমরা আমায় যেও না ভুলে
যখন যেথায় থাকি
ঘনিয়ে এলো ফিরার সময়
তাই মিনতি রাখি।
একটু স্মরণ রাখতে আমায়
কষ্ট না পাও মন আঙ্গিনায়।
ভ্যালকা বলে সেদিন যেন
দেও না আমায় ফাঁকি।
তোমরা আমায় যেও না ভুলে
যখন যেথায় থাকি।
সাধ ছিলো তোমাদের সাথে
থাকবো মিলেমিশে
বিধির লিখন যায় না খন্ডন
ফিরতে হবে শেষে।
যেথায় থাকি সর্বক্ষণে
তোমাদের কথা থাকবে মনে।
আমার লেখা বলবে কথা
হয়ত থাকি থাকি।
এখন আমার ফিরার পালা
তাই মিনতি রাখি।
প্রেমের লাল ঠোঁট
– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ
আমিতো প্রেম নই।
আমি যে প্রেমের লাল ঠোঁট
আমাকে চুম্বন করো।
কই দাঁড়িয়ে কেনো? কী ভাবছো?
লোক লজ্জ্বা? না সমাজের ভয়।
ভুল সমাজকে কেমনে স্বীকার করো?
গোলাপ আর জবার যেখানে এত তফাৎ।
জবার বুকে গন্ধ নাই – তাই? সবই তো ফুল।
আমিতো তোমার চুম্বন আশায়।
আমাকে চুম্বন করো।
আমাকে চুম্বন করে মানুষ হবে সত্য মানুষ,
মানুষ পাবে মানবতা।
বিশ্বাস হয় না বুঝি?
আমাকে চুম্বন করে মানুষ পাবে
অনাবাদী জমিতে সঠিক ফসল।
থাকবে না সমাজে পিশাচের রক্তামি।
যদি বিশ্বাস না হয়, তবে শোনো,
প্রেম অর্থ দেহ ভোগ নহে।
প্রেম অর্থ মুমারী বোনের
সতীত্ব নষ্ট করাও নহে।
আমিতো তোমাদের বলি
আমাকে চুম্বন করলে
তোমাদের ফসলি জমি হবে না পতিত।
আমি যে প্রেমের লাল ঠোঁট।
আমাকে চুম্বন করলে
পৃথিবী পাবে নুতন সমাজ।
যেখানে মানুষে মানুষে থাকবে না কোনো তফাৎ।
ঘুচে যাবে মানুষে মানুষে বৈষম্য।
আমি যে প্রেমের লাল ঠোঁট।
কবি পরিচিতি

শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ। জন্ম অক্টোবর ২৭, ১৯৫৩ সালে বাগেরহাট জেলার মিঠাখালী গ্রামে। পিতা খাদেম আলী শেখ ও মাতা জয়নাব বেগম। মোংলা উপজেলার টাটিবুনিয়া স্কুল থেকে ১৯৬৮ সালে মাধ্যমিক এবং ১৯৭০ সালে বাগেরহাট সরকারি পি সি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ।
সহজ ও সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত এক বাউল কবি তিনি – কবির চিত্ত কাব্য সাধনার অনন্য এক ভূমি। তাই কিশোর বয়স থেকে যে লেখালেখির শুরু, জীবনের সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসে এখনো তাঁর কাব্য সাধনা চলেছে অক্লান্তভাবে। তাঁর লেখার মধ্যে প্রেম ও প্রকৃতিই প্রধান্য পেয়েছে সব সময়। ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে কয়েকটি কবিতার বই এবং দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সাময়িকীতে স্থান পেয়েছে তাঁর অনেক কবিতা। (মোবাইল – ০১৩২ ৯৭৩ ০০৯)