শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ – কবিতা (আশা, খেয়াল, কীসের তথাৎ)

আশা

– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ

কবে কোথায় দেখা পাব​
​ ​ ​ ভাবি শুধু তাই​
মরার পরে হলেও যেন​
​ ​ ​ ​ তোমার দেখা পাই।​
একবার তোমার দেখা পেলে​
বেহেস্ত দোযখ যাব ভুলে।​
তোমায় দেখার সাধের চেয়ে​
​ ​ ​ বড় সাধ নাই।​
কবে কোথায় দেখা পাব​
​ ​ ​ ভাবি শুধু তাই।​

মালিক তুমি জীবন দিবার​
​ ​ ​ ​ নিবার মালিকও তুমি​
সবার উপরে তুমিই শ্রেষ্ঠ​
​ ​ ​ ​ ​ তাইত জানি আমি।​
​ ​ ​ একবার হলেও দয়া করে​
​ ​ ​ ​ দেওনা দেখা ভবের পরে।​
কত জনায় দিলে দেখা​
​ ​ ​ তুমি মালেক সাই।​
কবে কোথায় দেখা পাব​
​ ​ ​ ভাবি শুধু তাই।

খেয়াল

– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ

দিনকে লুকাও রাতের বুকে​
​ ​ ​ ​ রাতকে দিনের মাঝে​
তোমার সৃষ্টির রহস্য বুঝা​
​ ​ ​ ​ আমার কি আর সাজে।​
সকাল বেলা যে ফুটাও​
সন্ধ্যা হলে ধূলায় লুটাও।​
মুক্তা রাখো সাগর তলায়​
​ ​ ​ ঝিনুক বুকের মাঝে।​
দিনকে লুকাও রাতের বুকে​
​ ​ ​ ​ রাতকে দিনের মাঝে।​

পথ না ভুলি তাইত দিলে​
​ ​ তোমার কোরান খানি​
বেহেস্ত করলে দোযখ করলে​
​ ​ ঐ কোরানেই জানি।​
​ শখ করে মানুষ করলে​
​ ষঢ়রিপু কেনো দিলে?​
চিন্তার কাছে পাইনা জবাব​
​ ​ তোমার খেয়াল কী যে।​
দিনকে লুকাও রাতের বুকে​
​ ​ রাতকে দিনের বুকে।

কীসের তথাৎ

– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ

হিন্দু মুসলিম কীসের তফাৎ​
​ ​ আমরা সবাই বাংগালী​
বাংলা মায়ের শ্যামলা বুকে​
​ ​ এক সারিতে চলি।​

একই মায়ের সন্তান মোরা​
​ ​ ​ সবে ভাই ভাই​
হিন্দু মুসলিম যে যাই বলো​
​ ​ কোন তফাৎ নাই।​

হিন্দু মুসলিম বলে যারা​
​ ​ তফাৎ খুঁজতে চায়​
জানে না তারা, ঠিক আমাদের​
​ ​ কী যে পরিচয়।​

বাংলা মায়ের কাদার গন্ধ​
​ ​ আমাদের শরীরে আছে​
তাইতো আমরা নুয়াইনা মাথা​
​ অন্যায় অপরাধের কাছে।​

মরণ মোদের জানায় সালাম​
​ আজরাইল কয় নমস্কার​
আমরা মায়ের দামাল ছেলে​
​ করতে জানি প্রতিকার।​

দ্বিতলবাসী, বস্তিবাসী​
​ ​ যেথায় যে বাস করি​
দরকার হলে মায়ের জন্য​
​ ​ জীবন দিতে পারি।


কবি পরিচিতি

শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ। জন্ম অক্টোবর ২৭, ১৯৫৩ সালে বাগেরহাট জেলার মিঠাখালী গ্রামে। পিতা খাদেম আলী শেখ ও মাতা জয়নাব বেগম। মোংলা উপজেলার টাটিবুনিয়া স্কুল থেকে ১৯৬৮ সালে মাধ্যমিক এবং ১৯৭০ সালে বাগেরহাট সরকারি পি সি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ।

সহজ ও সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত এক বাউল কবি তিনি – কবির চিত্ত কাব্য সাধনার অনন্য এক ভূমি। তাই কিশোর বয়স থেকে যে লেখালেখির শুরু, জীবনের সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসে এখনো তাঁর কাব্য সাধনা চলেছে অক্লান্তভাবে। তাঁর লেখার মধ্যে প্রেম ও প্রকৃতিই প্রধান্য পেয়েছে সব সময়। ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে কয়েকটি কবিতার বই এবং দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সাময়িকীতে স্থান পেয়েছে তাঁর অনেক কবিতা। (মোবাইল – ০১৩২ ৯৭৩ ০০৯)