পারমিতা ব্যানার্জি – কবিতা(বন্ধন, সময় কথা বলে, চাঁদের গ্রহণ ব্যথা, কোন অনুরাগে, বিলম্বিত শ্রাবণে)

বন্ধন

(ট্রায়োলেট ফরম্যাটে)

– পারমিতা ব্যানার্জি

পুরোনো চাবি ঘুরিয়েই দিশা খুঁজে চলি।
জীবনের কান্না আঁকড়ে বাঁচে সজীবতা!
সাগরের ভরা ঢেউ চেনে না কানাগলি।
পুরোনো চাবি ঘুরিয়েই দিশা খুঁজে চলি ।
রঙচঙে অবয়বে নাচে যে কথাকলি।
সবুজ পাতায় সুখী বাঁচার মধুরতা!
পুরোনো চাবি ঘুরিয়েই দিশা খুঁজে চলি।
জীবনের কান্না আঁকড়ে বাঁচে সজীবতা!

সময় কথা বলে

– পারমিতা ব্যানার্জি

ইচ্ছে ছিল বাঁধবো
সুখের বাড়ি …
থাকবে তাতে মস্ত দেয়াল ঘড়ি,
রাখবে হিসেব
তোমার আমার দেখা হওয়ার
হারিয়ে যাওয়া ক্ষণ!
পাতন যন্ত্রে
জীবন ছেঁকে দেখা __
কিংবা হাত ঘুরোলেই নাড়ু
জবরদস্ত!
পেরোই যখন নাম-না-জানা
হাজার পথের সহস্রটা বাঁক,
না হয় অঙ্ক খাতায়
নতুন ফর্মুলা __
সময় ঘেঁটে মাখি মশলা মুড়ি!
তোমার আমার মাঝে
জমুক যতই দামী কমা (,),
হোঁচট খেয়ে
পেতে পারি দাঁড়ি(।)।

চাঁদের গ্রহণ ব্যথা

– পারমিতা ব্যানার্জি

অভিমানী চাঁদ ঢেকেছে মুখ
চন্দ্রগ্রহন কালে।
সরসী আকূল হ’ল তবু
দেখতে সে চাঁদমুখ!
পৃথিবীর দোষ কিছু ছিল না
প্রাকৃতিক নিয়মে!
তাই তো সে দাঁড়িয়েছিল
চাঁদ আর সূর্যের মাঝে!
চাঁদ রাগ করে ভাবে,
কিসে বাধা পেল তার কিরণ!
ভুল বুঝে পৃথিবী
সরে গেল ধীরে,নিয়ম মেনে!
আলোয় ভরে চাঁদ
এলো ফিরে সশরীরে,
সেই পূর্ণিমার রাতে!
সরসীর আরশি
দেখলো সে চাঁদমুখ আবার!

কোন অনুরাগে

(ট্রায়োলেট ফরম্যাটে)

– পারমিতা ব্যানার্জি

কাল যে গান শুনিয়েছিলে তুমি,
পাহাড়ী সে নদী, মনে বয়ে গেল!
স্মৃতি আলো চোখে দিলো চুমি!
কাল যে গান শুনিয়েছিলে তুমি।
সুখে আঁখি জল এসেছিল ভ্রমি!
প্রেম বুঝি তাই ফিরে এসেছিল!
কাল যে গান শুনিয়েছিলে তুমি ;
পাহাড়ী সে নদী, মনে বয়ে গেল!

বিলম্বিত শ্রাবণে

– পারমিতা ব্যানার্জি

অনেক দিনের পরে যে
আজ শ্রাবণ এলো।
ভাবনাগুলো হয়ে গেল
উদাস এলোমেলো।

ঘন শ্রাবণ আমার বুকে
হলো পাগল পারা।
শ্রাবণ আঁকা দুটো নয়ন
নির্ঝরে দিশেহারা।

গোধূলি হারালো আজ
মেঘের ঐ চাদরে।
মনে কত কবিতা সাজে
শ্রাবণেরই আদরে।


কবি পরিচিতি

পারমিতা ব্যানার্জি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার উত্তরপাড়ায় আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। পিতা স্বর্গীয় দাশরথি দাস, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। মাতা স্বর্গীয় মণিকা দাস গৃহবধূ ছিলেন। ছয় ভাই বোনের মধ্যে আমি চতুর্থ। বর্তমানে আমি আমার জীবন সাথী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্রী তমাল ব্যানার্জি, একমাত্র পুত্র পরন্তপ ও পুত্রবধু পৃথা সহ শ্বশুরালয়ে থাকি।

ছোটবেলায় বাবার অনুপ্রেরণায় ও মায়ের সাহচর্যে লেখালেখি, আবৃত্তি ও ছবি আঁকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে সংসারে জড়িয়ে পড়ে ছেদ পড়ে লেখায়। কুড়ি বাইশ বছর পর পুত্র পরন্তপের উৎসাহে নতুন করে কলম ধরা এবং বাংলা কবিতা ডটকমে যুক্ত হওয়া। এখানেই আমি নতুন করে খুঁজে পাই জীবন। এই কবিতার জগতে এখন চলছি এবং চলছি।