স্মৃতি
– পারমিতা ব্যানার্জি
আজ চাঁদের আলোয়
মিশে গেলো
তাৎপর্যহীন বিলাপ যন্ত্রণা!
জ্যোৎস্নার ভারে ক্লান্তি আসে
নিদ্রিত আঁখিপল্লবে!
পিঁড়ি পেতে বসে থাকে মন
স্মৃতির দালানে।
খন স্বপ্ন চুম্বনে চুম্বনে ভরায়
শেষ রাত্রির বুক _
চিত্তবীণায় কী যেন এক সুর
ঝরে যায় অকাতরে।
দূয়ারে দাঁড়িয়ে কে কথা বলে!
বড় চেনা মনে হয় সে কণ্ঠস্বর!
আধো ঘুমে শুনি _
দূরত্বের স্মৃতি যেন বলে যায়
__”আমি ভালবাসা”।
জ্যোৎস্নার চাদরে
নিস্তব্ধতা নেমে আসে ক্রমে…
হৃদয় উজাড় করে
দিতে চাওয়া আনন্দ আর
পেতে চাওয়া অমল সুখ
বাসি হয়ে যায় ভীষণ এক
নৈঃশব্দ্যের ঘোরে!
মাশুল
– পারমিতা ব্যানার্জি
যদি কোনো উতলা নদী,
কাছে যেতে করে বারণ!
দেয় অজুহাতও_
তবে কী করবো না স্নান!
হবো না শীতল !!!
যদি কোনো বাগানের ফুল
দুলে ওঠে ভুল করে…
আমি কী চাইবো না ছুঁতে!
নেবো না কি সৌরভ,
হবো না মাতাল!!
পথ ভুল, ঐ মেঘ চূড়ে
যদি যাই উড়ে _
সূর্যাস্তের রঙে রাঙা হতে!
মেঘ কি সরিয়ে নেবে রঙ!
হতে দেবে না বিমল !!
কেন এসব ভাবনা মনে!
আমি কি হারাই প্রেম
ক্ষণে ক্ষণে!!
না কী বুঝেও বুঝি না,
প্রেমের কী মাশুল!
যন্ত্রণার মহাশূন্যে
– পারমিতা ব্যানার্জি
আকাশ খবর বোনে _
নক্ষত্রের নকশি কাঁথায়!!
কোনো এক কালো পরী
রাত বাড়লেই খুঁজে নেয়
ছন্দ-নেশা নীল কবিতা…
তখনই একে একে সব
“তুমি”রা এসে জড়ো হয়
স্থাপত্যের পাদদেশে;
আমাকে ভীষণ ভালবেসে
বৈপ্লবিক চেতনা জাগায়!
সমাবেশে সোচ্চার সেই
সব মুষ্ঠিবদ্ধ হাতগুলি
ভীষণই ক্ষোভের মুখে
আমার ‘আমি’র সাথে
আকাশের পথেই ধায়!
আমি – তুমি মিশে যাই
গলি থেকে রাজপথে,
আগুন ঝরানো কলমে!!
বিপ্লব জ্বলে ওঠে _
চোখের তারায় তারায়…
বিকেলের ফুল
– পারমিতা ব্যানার্জি
ফেলে আসা কিশোর প্রেম
চালসে চোখে
চিনলে কি?
যে বয়সের যেমন পাওনা_
পেরিয়ে গেলে
বড্ড ফাঁকি!
শেষ বিকেলে বরাত জোরে
ছিঁড়লে শিকে
শরম কী!
মনটা নবীন থাকুক না হয় _
প্রেম হৃদয়ের
হোক সাকি!
কবি পরিচিতি

পারমিতা ব্যানার্জি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার উত্তরপাড়ায় আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। পিতা স্বর্গীয় দাশরথি দাস, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। মাতা স্বর্গীয় মণিকা দাস গৃহবধূ ছিলেন। ছয় ভাই বোনের মধ্যে আমি চতুর্থ। বর্তমানে আমি আমার জীবন সাথী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্রী তমাল ব্যানার্জি, একমাত্র পুত্র পরন্তপ ও পুত্রবধু পৃথা সহ শ্বশুরালয়ে থাকি।
ছোটবেলায় বাবার অনুপ্রেরণায় ও মায়ের সাহচর্যে লেখালেখি, আবৃত্তি ও ছবি আঁকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে সংসারে জড়িয়ে পড়ে ছেদ পড়ে লেখায়। কুড়ি বাইশ বছর পর পুত্র পরন্তপের উৎসাহে নতুন করে কলম ধরা এবং বাংলা কবিতা ডটকমে যুক্ত হওয়া। এখানেই আমি নতুন করে খুঁজে পাই জীবন। এই কবিতার জগতে এখন চলছি এবং চলছি।