ইচ্ছাশক্তি
– নরেশ চন্দ্র হালদার
পাশ ফেল জীবনে
বড় কথা নয়,
ব্যর্থতাকে দু’পায়ে
দলে যেতে হয়।
মনোবল দৃঢ় যার
জয় তার হবে,
জীবনের সব বাঁধা
পেরিয়ে সে যাবে।
অদম্য শক্তির কাছে
সবকিছু নত,
’গুগল’ ঘাটলে প্রমাণ
পাবে শত শত।
চিন্তাশক্তির বিকাশ
হবে যার যত,
নতুন নতুন কিছু
করবে সে তত।
ইচ্ছাশক্তির কাছে
সব কিছু বশ,
প্রভাব, প্রতিপত্তি বা
ধন, মান, যশ।
আপন শক্তির বলে
হলে বলীয়ান,
তার দ্বারা পৃথিবীর
হবে কল্যাণ।
মা
– নরেশ চন্দ্র হালদার
লক্ষ লোকের ভীড়ে
আমার আপন কে?
সে আমার গর্ভধারিনী
আপন বলি তারে।
এই পৃথিবীর আলো বাতাস
যার কারণে দেখি,
তাকেই সবার সেরা বলি
আর সকল ই মেকি।
বিপদে পড়লে এই জিনিসটা
সত্যি বোঝা যায়,
সবাই চলে গেলে ও কিন্তু
মা ই রয়ে যায়।
মা-ই পারে বাবা হতে
বাবা-রা নাহি পারে,
সবচেয়ে বেশি কষ্ট স্বীকার
মা করে সংসারে।
মা’কে যারা শ্রদ্ধা করে
তারাই ভাগ্যবান,
তাদের দ্বারাই এ পৃথিবীর
হয় বেশি কল্যাণ।
মায়ের পায়ের নিচে সবার
স্বর্গ সুখ থাকে,
মা’কে কষ্ট দিলে ছেলে
পড়বে দূর্বিপাকে।
মা’কে সম্মান করার ক্ষেত্রে
কার অবদান বেশি,
শতকরাটা হিসাব করলে
মেয়েরা হবে খুশি।
মায়ের আশীষ থাকলে কারো
হয় না কোন বিপদ,
মায়ের চোখের জল যে ঝরায়
বন্ধ তার সব পথ।
বাংলা ভাষায় সবচেয়ে সুন্দর
শব্দটি হলো মা,
মায়ের সাথে কখনো কারো
হয় না তুলনা।
ঘুস
– নরেশ চন্দ্র হালদার
চাকরিজীবী ঘুস খেতে চায়
চায় না ঘুস চাষা,
ন্যায্য দামে ফসল বেঁচুক
এটাই তাদের আশা।
’ঘুস’ নামক ব্যাধিতে আজ
ছেয়ে গেছে দেশ,
ঘুস খেয়ে কিছু লোক
আছে কিন্তু বেশ।
ঘুস খেতে চোখের পর্দা
মোটা হওয়া চাই,
লাজ লজ্জা থাকলে পরে
জুটবে না এক পাই।
ঘুসের আছে অনেক নাম
’সেলামি’, ’বকশিষ’,
’অফিস খরচ’, ’সম্মানী’
কিংবা ’আশিষ’।
ঘুস খেয়ে ফুসফুস
মোটা করা যায়?
পেট মোটা হতে পারে
ফুসফুস নয়।
লোভে পড়ে ঘুস খেলে
রোগ ব্যাধি মেলে,
ঘুস খেয়ে ধরা পড়লে
যেতে হবে জেলে।
জেলে বসে পঁচে মরার
আছে কী দরকার?
বউ যদি ছেড়ে দিয়ে
ধরে কারো সংসার!
কবি পরিচিতি

নরেশ চন্দ্র হালদার। জন্ম অক্টোবর ১০, ১৯৬৬ সালে বাগেরহাট জেলার (তখন খুলনা জেলা) মোংলা থানার (তখন রামপাল থানা) মোংলা পোর্ট পৌরসভা (তখন চাঁদপাই ইউনিয়ন)-র কেওড়াতলা গ্রামে। পিতা হরেন্দ্র নাথ হালদার এবং মাতা সুভদ্রা হালদার।
১৯৭২ সালে সেন্ট পলস্ উচ্চ বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণিতে ভর্তি এবং ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত ঐ স্কুলেই পড়াশুনা। তারপর ১৯৮২ সালে চালনা বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এস. এস. সি.পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার অইর ১৯৮৪ সালে মোংলা কলেজ থেকে এইচ. এস. সি. সমাপ্ত। ১৯৮৮ সালে খুলনা পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। ১৯৯১ সালের ১লা জানুয়ারি সেন্ট পলস্ উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান। ১৯৯৩ সালে ঢাকার তেঁজগাঁও কলেজ থেকে বি. এ. এবং ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি. এড. পাশ। পরবর্তিতে ২০০৩ সালে খুলনা বি. এল. কলেজ থেকে দর্শন শাস্ত্রে এম. এ. পাশ করেন এবং ২০১৫ সালে মোংলা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান। পারিবারিক জীবনে তিনি বিবাহিত এবং এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক।
ছোটবেলার সেই গ্রামবাংলার মাঠ-ঘাট ও প্রতিদিনের জীবনযাত্রা তার স্মৃতিতে এখনো অমর। এইসব স্মৃতি যেমন তার লেখার প্রেরণা, তেমনি তার লেখার বিষয়ও বটে। তার কবিতায় তাই বিলুপ্ত অথবা বিলুপ্তপ্রায় গ্রাম্য জীবনের এই সব খুঁটিনাটি প্রকাশিত হয়েছে। তার কবিতা পড়তে গিয়ে পাঠকদের পরিচয় হয় সেই জীবনের সহজ-সরল স্মৃতিমধুর ফেলে আসা পুরনো দিনগুলির সাথে।