মল্লিকা রায় – কবিতাগুচ্ছ

কমলেশ

– মল্লিকা রায়

কবিতার অমোঘ হৃদয়ে ​
এতকাল রাখা ছিল, অর্ধসমাপ্ত ফুলস্কেপ, ​
প্রাচীন দোয়াত, ভ্রান্তির মুদ্রাক্ষর, যাপনের​
টুকিটাকি, ইউস থ্রোর’ সস্তা রিফিল​
আর মগজ ভর্তি ​
ইউরেনাস, নেপচুন, প্লুটোর​
খন্ডিত অলৌকিক প্রভা।

আজ ভাষা ফুটে উঠল​
যখন দেখলাম এখানেও রাখা যায় ​ ​
বিশ্বস্ততা, চুক্তি লঙ্ঘন, মৃত্যু ও ঐহিক জন্মের​
নৈতিকপত্র, নেতিবাচক লাশ, অর্বাচীন দগ্ধতা ​
আর উৎসর্গীত ভবিতব্য…..​
তিনশত রাত্রির উদ্গীরণ চেপে আমি​
অশ্রুজলে চুবিয়ে রেখেছি​
শূলবিদ্ধ আব্বাকে, হারিয়ে যাওয়া​
কমলেশকে…..​

আরো আছে অসমাপ্ত ​
কান পাতলেই দিব্য শোনা যায়, আসলে​
প্রহরের কাছে অজ্ঞ হয়ে বসে আছি​
প্রবহমান শব্দ কুড়িয়ে আব্বা আর কমলেশকে বাঁচাতে না পারার অজ্ঞতা​
হয়তো অনেক কিছুই বদল হতে পারত…..​

আজ আবার কবিতাকে ​
বিশ্বাস ও স্বাধীকারের তালিকায় রেখে​
সব কটাক্ষ রোধ করে​
যদি নিবিষ্টে বসি পাশে​
একান্তের শূন্যতায় একরাশ ঔদার্য্য নিয়ে​
যদি ফিরে আসে কমলেশ ​
আর আব্বাজান ​
অক্ষর পৃষ্ঠায়​
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ……যদি !

পাপিয়া

– মল্লিকা রায়

তুমি নয় মৌন থাকো
বেশ কিছু লক্ষ্মী হয়ে
না হয় ওই দেমাগ গুলো
যাক না দ্বি’চার বয়ে।

ছুড়ে দাও পকেট”টাকে
তোলা ঢেউ নিতম্বে ওর
মুখে থাক হাজার সোহাগ
শাজাহান রতন কেয়ুর।

উড়ে যাও হাওয়ার বেগে
উড়িয়ে পানসে ধূসর
জীবনের সেই আবেগে
বহে যাক সান্ধ্য প্রহর।

সাজিয়ে পাপড়ি মালায়
যে কারে উজার বানাও
ঢালো না আঁতর দানে
তোমার ওই স্বর্ণপ্রভাও।

চলে যাও রাজ মেজাজে
ভেবে নাও স্বর্গারোহণ
সাধের ওই সবকটি ভুল
ঢেলে দাও অবুঝ সাজে।

আসলে মারছ ভেবেই
যে বুকে হৃদয় বিঁধে
তোমারই ভুলের মাশুল
তোমাতেই হিসেব ফেরার।

গুয়েভারার হাঅন্ন!

– মল্লিকা রায়

বিষেও উন্মাদনা থাকে
লোভের প্রকার
কিছু লোভ ধিকিধিকি জ্বলে
আঁকাবাঁকা কিছু লোভ
আজীবন
যোগীর মতন!

মন্ত্রপূতঃ জলেও অতল কারসাজি
ঘরেও বিবিধ প্রকরণ
চেলা বোঝে গুরুর দাওয়াই
নিধনের শেষেও অগাধ নিধন।

আহ্লাদ সন্ন্যাস নিলে
যোগের ব্যাপারী বাঁধে ঘর
সংসারীও সুযোগমতন
পেতে রাখে যোগীর আদর!

মন্দিরও গৃহীর সমাগম
পৃজা অন্ন মন্ত্র বিনিময়
একই মন্ত্রে বিষক্ষয় আর
বিষধর মারণের জয়!


কবি পরিচিতি


মল্লিকা রায়। বারাসাত, উঃ চব্বিশ পরগণা। লেখেলেখি একপ্রকার নেশা। বাৎসরিক ‘পদক্ষেপ’ সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদিকা।​