এইতো তুমি এখানেই ছিলে
– যোষেফ হাজরা
এইতো তুমি এখানেই ছিলে
তবুও যেন ফিরে এসেছ বহুদিন পর
তোমার সে চোখ আমাকে গ্রহণ করে
আমি লজ্জিত হই
বুঝতে পারি, তুমি যা বোঝাতে চাও
চোখের তারা অপলক হাতছানি দেয়
যদিও আমি আর কোন শব্দ ব্যবহার করব না
তুমি এড়াতে পারনি আমাকে, জড়িয়ে ধরেছো
আমি এই দৃষ্টিকোণ
বহুদিন খুঁজে পাইনি তোমার কাছে
সেই তুমি আজ যদি নীড় খুঁজে পাও
তবে কেন আমি আর বাধা হব?
এতটুকু বলতে পারি,
খুব বেশি দেরী হয়ে যায়নি
হাত ধরে চলে যেতে পার যতদূর চাও
পথে পথে বেলা শেষ আমিও করতে পারি
আর যদি ভুলে যাও
দুঃখ পাব না
জানব তুমি একবার এসেছিলে
উষ্ণ হৃদয় নিয়ে যে ভার নিবেদন করেছিলে
ফেলে দিতে পারিনি
না পেরেছি বুকে তুলে নিতে
হয়তো আমরা বেঁচে থাকতে চাই
উষ্ণতর সম্পর্ক নিয়ে, সেই ভাল
যেখানে আশা নেই তবুও আশা আছে
ভালবাসা নেই, তবুও হৃদয়ে না পাওয়ায় ব্যথা
নির্জন রজনীর বুকে সুখ এনে দেয়
সেই সুখে নিজেকে নষ্ট নাই করলাম
দুরে থেকে কাছে থেকো
যদি না নিজেকে ভুল মনে না কর
মনে পড়ে সেই মুখ
– যোষেফ হাজরা
মনে পড়ে সেই মুখ
সেই চোখ, সেই হাসি
সেই কথাগুলো ছায়া ফেলে চলে যায়
তবু তার সমাধান আছে
উত্তর পেয়ে আমি মাথা নত করি
সত্যি কি এই তুমি সেই তুমি নও
এক দুঃখের সমুদ্র মন্থন করে
তুমি আছ নতুন মানুষ
হাত বাড়িয়েছ বুকে স্বপ্ন নিয়ে
চোখে ঝরে পড়ে হৃদয়ের কথা
আমি কী বলব ভেবে পাই না
আর যা বলি শুধুই ছলনা নিজের সাথে
আমি ধরা পড়িনি তোমার কাছে
তুমি ধরা পড়ে গেছ সহজেই
এই পুষ্পরথ আমি কি আগেই রচনা করিনি?
আসো উঠে এসে হৃদয়ের কাছাকাছি
এই তীব্র মহামারিতে উষ্ণতর সম্পর্কে বেঁচে থাকি
আশার স্বপ্ন দেখে দেখে বেলা পড়ে যাক
সন্ধ্যায় নিশ্চুপ আঁধারে ঘুমাব চিরকালের মত
হাসি, আনন্দ, গানে যেভাবে পাশে ছিলে
তুমি জানো আমি জানি
তবু নৃ বলার মাঝে সকল বলা লুকিয়ে থাকে
খুঁজতে খুঁজতে একদিন আমি বুঝতে পেরেছি
যে তুমি আমার কাছ থেকে সরে গিয়েছিলে
পৃথিবীটা বড্ডো ছোট, তাই ফিরে এলে
এসেছ সগৌরবে, সকল কুহেলিকা ব্যর্থ করে
হয়তো তুমি জয় করে নিয়েছ
আমি কিছুতেই বোঝাতে পারিনি তুমি জয়ী
জানি না কী হবে যে দিন বোঝাতে পারব
জানি আবার দেখা হবে
– যোষেফ হাজরা
জানি আবার দেখা হবে
আবার তোমার হৃদয়ের কাছে পাব উষ্ণতা
আমি মনে করি তোমাকে
তুমি কি আমার কথা ভাব?
নাকি আমি মিথ্যা কোন স্বপ্ন দেখি?
আগে আর পরে এবং কিছু ধারাবাহিকতা
তুমি যদি আমাকে বাধ্য কর
হয়তো করনি কারণ তুমি ভারাক্রান্ত হৃদয়ে
আমাকে ভালবেসেছ
এমনই চমকে দিয়েছ যা আশা করিনি
তাই আমি ফিরে যেতে পারি না
দুঃখ দেওয়া আর দুঃখ পাওয়া যখন এক হয়ে যায়
তখন ভালবাসা স্বার্থক হয়ে ওঠে
কিন্তু তুমি এত কাছে ছিলে না
যেমন কখনো ভাবতেই পারিনি আজ তুমি তাই
তবুও তুমি দূরে আমার দৃষ্টি সীমানার পরে
অন্তত কিছু বোঝাতে পেরেছিলে
উত্তর নিয়ে কেন যাও নি?
আশ্বাস আছে, আমিও দিয়েছি
তুমি চেয়েছ বলে
যদি না চাইতে আমি কী করতাম জানি না
জড় আর স্থবির হতে হতে মুষড়ে পড়তাম
ভালই করেছ
যা হবে ভাল হবে ক্ষতি নেই
শুধু হাত ধরে রেখ, ভয় নেই ছাড়ব না
আর যদি ভুল মনে কর গল্প লেখা
তবে অসংকোচ করো না
বেঁধে রাখব না
কবি পরিচিতি

যোষেফ হাজরা। ছদ্ম নাম তারুণ্যের কবি।
আমি আমার জীবন গঠনের সময় বহু জায়গার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছিলাম। শহরের হাওয়া বা মফসলের জীবন এমনকি উত্তর আর দক্ষিণাঞ্চলের জীবনধারার ছোঁয়া আমি হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করেছি। আমার জন্মস্থান মোংলার স্বনামধন্য সেন্ট পলস হাসপাতালে। ১লা মে জন্ম হাওয়ায় ফাদার মারিনো রিগন আমার নাম যোষেফ (আধুনিকায়নে যোসেফ) রাখে। পিতা তাপস হাজরা, মাতা এন্ড্রো রিনা নাথ।
আমি প্রথম যখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “আমাদের ছোট নদী” কবিতা পড়ে তার সম্পর্কে জানি তখন থেকেই তিনি আমার অনুপ্রেরণা। এ জন্য চিত্রকলা, সংগীত, আবৃত্তি, অভিনয় ও পরবর্তীতে সেন্ট পলস স্কুলের লাইব্রেরি ও বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের অপার সুযোগে লেখালেখির হাতে খড়ি দেই। সকল শিল্প-সংস্কৃতি থেকে আমি লেখালেখি করতে বেশি ভালবাসি। কারণ মনের কথা সম্পূর্ণরূপে ব্যক্ত করে, ভাষার জাদুকারিত্বে, জ্ঞান ও দর্শনের যে সমন্বয় হয়, সেই আত্মদর্শনে সম্পূর্ণ আত্মতৃপ্ত করতে সক্ষম। আমি যদিও রবীন্দ্রনাথকে গুরুদেব মানি তবুও তার ধাঁচে আমি লিখি না। আমি কাব্য ও রচনায় অন্যান্য ঢং রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করি যাতে কেউ পড়ামাত্রই বুঝতে পারে এই লেখনীর স্রষ্টা কেবলমাত্র আমি।