ভাবিয়া দেখেছো
– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ
মাটির বাসনে স্বজন সাথে
এক মুঠো শাক ভাত
জোটে না যাদের তাইতে তাদের
অনাহারে কাটে রাত।
অনাহারী শিশু ক্ষুধার জ্বালায়
মায়ের গলা ধরে
কাঁদিয়া বলে ভাতের অভাবে
যাবো কি আমরা মরে?
সেই কান্নাব্য হয়তো খোদার
আরশ কাঁপিয়া ওঠে
মানুষের কানে সেই কান্না
কেনো যে যায় না মোটে।
ঘুমাবার বালিশ নাইরে ওদের
তাই মাথা রাখে ইটে
ভাবিয়া দেখেছো, ওদের রাত
কতই কষ্ট কাটে?
**************
**************
আমরা যাদের পশু বলি
তাদেরও ভালোবাসা আছে
তাইতো তারা মিলেমিশে
বন-বাদাড়ে বাঁচে।
এক মাঠে চরে তারা
আমরা দেখতে পাই
তাকিয়ে দেখো তাদের মধ্যে
স্বার্থের টান নাই।
স্বার্থের টান তাদের বেশী
সৃষ্টির সেরা যারা
ভাবিয়া দেখেছো, আমরা মানুষ
কতই লক্ষ্মীছাড়া?
কিসের বড়াই
– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ
নাইরে জানা কখন তোর
ফিরে যেতে হবে
অজানা এই জীবন নিয়ে
কিসের বড়াই তবে।
গরীব কেনো ঘৃণা করো
তারা কি মানুষ নয়?
তাদের শিরায় তোমাদের মতই
লাল রক্ত বয়।
টাকা-কড়ি ভবের সম্পদ
ভবেই পড়ে রবে
মনে রেখে ফিরিয়ার সময়
শূন্য হাতেই যাবে।
টাকার গরম এই ভবেতে
ভালই চলে জানি
মরার পরে ঐ গরমে
আনবে যে তোর গ্লানি।
ধনী-গরীব তফাৎ ভুলে
মানুষ জেনে সবে
ভাইয়ের দরদ দিয়ে সবে
বুকে টেনে নেবে।
তবেই তুমি মরার পরে
ধন্য হয়ে যাবে
ভরে যারা থাকবে তারা
তোমারি জয় গাবে।
যদি নাম লেখা দেখো
– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ
যদি, নাম লেখা দেখো
স্মৃতির পাতায়
পারোতো থুথু ফেলে বলো
আমিতো চিনি না তোমায়।
তাতে আমি খুশী হবো
তোমায় নাহি দোষ দেবো।
যদি তাতে বলো ভুল
ভুল কিন্তু নয়।
যদি, নাম লেখা দেখো
স্মৃতির পাতায়।
কখনো যদি পথ ভুলে
আমার কবর পাশে
ক্ষণেকের তরে থমকে দাঁড়াও
অচেনা পথিক বেশে।
আমি বলবো চিনেছি তোমায়
তুমিতো সেই, পূজেছি যে পায়।
না দিয়ে দেবতায় পূজার প্রসাদ
দিয়েছিনু সেই পায়
যদি, নাম লেখা দেখো
স্মৃতির পাতায়।
**************
**************
সারাটি জীবনে একটু ফুল
দাওনি যারে ভুলে
কোন অধিকারে আজকে তুমি
তার কবরে এলে?
কর্মফল পেতেই হয়
লোকে যতই মন্দ কয়।
বাকি জীবন হিসাব মিলাও
জীবনের খাতায়।
যদি, নাম লেখা দেখো
স্মৃতির পাতায়
পারোতো থুথু ফেলে বলো
আমিতো চিনি না তোমায়।
কবি পরিচিতি

শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ। জন্ম অক্টোবর ২৭, ১৯৫৩ সালে বাগেরহাট জেলার মিঠাখালী গ্রামে। পিতা খাদেম আলী শেখ ও মাতা জয়নাব বেগম। মোংলা উপজেলার টাটিবুনিয়া স্কুল থেকে ১৯৬৮ সালে মাধ্যমিক এবং ১৯৭০ সালে বাগেরহাট সরকারি পি সি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ।
সহজ ও সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত এক বাউল কবি তিনি – কবির চিত্ত কাব্য সাধনার অনন্য এক ভূমি। তাই কিশোর বয়স থেকে যে লেখালেখির শুরু, জীবনের সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসে এখনো তাঁর কাব্য সাধনা চলেছে অক্লান্তভাবে। তাঁর লেখার মধ্যে প্রেম ও প্রকৃতিই প্রধান্য পেয়েছে সব সময়। ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে কয়েকটি কবিতার বই এবং দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সাময়িকীতে স্থান পেয়েছে তাঁর অনেক কবিতা। (মোবাইল – ০১৩২ ৯৭৩ ০০৯)