অনির্বাণ
– পারমিতা ব্যানার্জি
ছিন্ন হয়েছে সেইক্ষণ…
সেই কথোপকথন।
ফিরে আসে ফিরে যায়
যত শব্দ আলোড়ন!!!
হারিয়ে ফেলেছি
জাগ্রত রাতের গল্প!
হারিয়ে গেছে সব কবিতা!
পাশাপাশি বসি
নদীর কাছাকাছি।
অযুত দূরত্ব যেন …
স্মৃতি ভেসে গেছে বহুদূরে
নদীর স্রোতের টানে।
ভেসে গেছে যত্নে লালিত
যন্ত্রণার মুখ!
এখনো চাঁদ ওঠেনি,
হিমেল ধানের ক্ষেতে!
হেমন্ত হারিয়ে গেছে
বহুদিন হলো!
নিয়ম মেনে নবান্ন আসে!
শুধু বন্দুকের নলে এখনও
বারুদের গন্ধ…
চেতনা
– পারমিতা ব্যানার্জি
কবে থেকেই চলা শুরু এক অজানা
পথে। উৎকন্ঠায় খুঁজি শেষ ঠিকানা!
হয়রান হই। পাই না ওঠার সিঁড়ি!
টপকে যাই অরণ্য, নদীনালা গিরি!
দিনে রাতে যখন তখন পথচলা,
শ্যেণ দৃষ্টির নজরে ওপরওয়ালা ।
ভুল হলে মাশুলও কড়ায় গণ্ডায়।
গন্তব্যে সেটাই পর-পার বোধহয় !
পথের দুধারে ছড়ানো ছিটানো মণি
মাণিক্য মোহ বা লোভ হিংসার খনি।
লোভ বাড়ালেই শেষ হয়ে যাবে পথ
মাঝপথে। পড়ে থাকবে স্বর্গের রথ –
অবহেলার ধূলোবালি মেখে। ভুলোনা
ভালবাসা, নয় শেষে রইবে বঞ্চনা।
বৃষ্টি-কবি
– পারমিতা ব্যানার্জি
বর্ষায় শুধু নয় _
যখন তখন বৃষ্টি এলেই _
সংস্কৃতির এক ছবি,
বাঙালিরা হয়ে ওঠেন কবি!
মুখে অবশ্য বলেন __
ভাল্লাগে না এ্যাতো বৃষ্টি!
অসময়ে অনাসৃষ্টি…
রাস্তায় কাদা প্যাচপ্যাচ।
জবজবে ভিজে জামা
সর্দি হলেই ফ্যাঁচ ফ্যাঁচ…
তবু সহকারে আদা
মিলতো যদি এক কাপ চা!
আঃ!
সোনায় সোহাগা,
যদি পাওয়া যায় খাতা কলম।
এবং লিখে ফেলেন দু কলম।
কোথা থেকে যে কাব্যরা
ভীড় জমায় ঝাঁকে ঝাঁকে…
ফোটায় কথার ফুলঝুরি
খাতায় করে তারা গড়াগড়ি!!
আহা মরি মরি!
কবিতা বলে ফেলে __
ওহে বলিহারি বাঙালি,
তোমাকে হাজার গড় করি।।
এসো আনন্দ বিরহে
– পারমিতা ব্যানার্জি
ক্লান্ত যত নাটকের অন্তঃপুর
কর্ণকুহরে ভরায় হারানো সুর!
চঞ্চল মন কান পেতে শোনে…
আবেশ হারিয়েই দূর বহুদূর!!
ক্ষয়ে গেলেও একটু একটু দিন,
হিসেব কষি, কদিনই বা রঙিন!
বৃত্ত শেষের মিলন বিন্দু বন্ধনে,
ফেলে আসা দিন শোনাবে বীণ!
নিঃস্ব এক অনিকেত বিকেল,
বিষন্ন আকাশের নীচে বিহ্বল!
বেঁচে থাকা শুধু বাঁচার তাগিদে ,
জনম বিশ্বাসের আনন্দ মহল!!
স্বচ্ছ কবিতা
– পারমিতা ব্যানার্জি
আকাশ কি জানে,
ও কতটা সুন্দর!!
আকাশ-নীলে যখন
একখণ্ড সাদা মেঘ ভাসে,
তখনই শরৎ হাসে…
একটুও অহঙ্কার থাকে না
সেই সাদা মেঘের,
আকাশকে সাজাতে!!
তুমি কি বোঝো এসব??
যখন অহঙ্কারহীন মন
তোমাকে সাজায় __
একটু একটু করে।
তুমি দেমাকহীন কবিতা
হয়ে উঠতে থাকো!
তখনই এক সাদা প্রেম
নিঃস্ব হতে চায়
তোমার ঐ আকাশ বুকে!
তুমি কি বোঝো এসব??
কবি পরিচিতি

পারমিতা ব্যানার্জি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার উত্তরপাড়ায় আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। পিতা স্বর্গীয় দাশরথি দাস, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। মাতা স্বর্গীয় মণিকা দাস গৃহবধূ ছিলেন। ছয় ভাই বোনের মধ্যে আমি চতুর্থ। বর্তমানে আমি আমার জীবন সাথী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্রী তমাল ব্যানার্জি, একমাত্র পুত্র পরন্তপ ও পুত্রবধু পৃথা সহ শ্বশুরালয়ে থাকি।
ছোটবেলায় বাবার অনুপ্রেরণায় ও মায়ের সাহচর্যে লেখালেখি, আবৃত্তি ও ছবি আঁকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে সংসারে জড়িয়ে পড়ে ছেদ পড়ে লেখায়। কুড়ি বাইশ বছর পর পুত্র পরন্তপের উৎসাহে নতুন করে কলম ধরা এবং বাংলা কবিতা ডটকমে যুক্ত হওয়া। এখানেই আমি নতুন করে খুঁজে পাই জীবন। এই কবিতার জগতে এখন চলছি এবং চলছি।