চিত্রপটে আঁকা
– মনোজ কান্তি বিশ্বাস
খোয়াই নদী পলাশবনি
গ্রামছাড়া রাঙামাটির পথ,
ঘুরতে গিয়ে থেমে গেলো
চোখের মনি রথ।
কী অপরূপ দৃশ্য সে যে
গাছগুলি সব খাড়া,
হিংস্র পশু নেইকো তেমন
করবে না কেউ তাড়া।
শান্ত উদাস ঘুমায় সে বন
রাঙামাটির পরে,
বন পেরিয়ে সাঁওতালেরা
দিন ভরে কাজ করে।
খোয়াই নদী বইছে একা
শিথিল চরণ ফেলে,
শনিবারের হাটে সেথা
নানা জিনিস মেলে।
কেউবা সেথা পশরা সাজায়
কেউ করে নাচগান,
জীবন তাদের একঘেয়েমি
নেইকো অভিমান।
পলাশবনি হাটের পাশেই
খোয়াই নদী বাঁকা,
ছবিতো নয় ছবির মতো
শিল্পীর ছোঁয়ায় আঁকা।
জোস্নার ভাঁজ
– মনোজ কান্তি বিশ্বাস
একসূর্য আলো জ্বেলে
লক্ষ সূর্যের হাসির হৃদয়ে
বসতি আমার চাই,
তোমার কবজ কুণ্ডলী নিয়ে
আমি বিলীন হবো
সেই বসতিতে।
আর কিবা থাকে বাকী?
মধ্যযুগ ধরে ছিলাম
চাঁদের কণার ভাঁজে
আমি শুধু চেয়েছি –
ভাঁজ খুলে আলোর ভোরে বন্যায় ভেসে যেতে।
একটি সজনে পাতায় জমানো
শিশিরে – তোমার মুখের প্রতিচ্ছবি হোক সূর্য ঝলমল!
কবিতালাপ
– মনোজ কান্তি বিশ্বাস
শব্দের মৌমাছি
খুনসুটি করছে,
কানামাছি খেলাটা
অবিরাম চলছে।
বন্ধ জানালায়
মৌমাছির আনচান,
পাল্লা খুলতেই
সুর করে গাবে গান।
একতারা সুর নয়
কানামাছি ভো ভো,
কড়া সুর ভেজে নিয়ে
গেয়ে যাবে হয়তো।
কবিতার ছন্দ
বাজছে ধ্বনিতে,
কবিতার সুর লয়
কন্ঠের মনিতে।
কবিতার কথা আছে
সুর নাই মোটে ভাই,
ছন্দের মারপ্যাঁচ
অলংকার জোটে নাই।
এমনটা হলে পরে
রসবোধ আসে না,
সে কবিতা পড়তে
কেউ ভালো বাসে না।।
কবি পরিচিতি

মনোজ কান্তি বিশ্বাস। জন্ম ১৯৭৫ সালে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার মাইটভাঙ্গা গ্রামে। বটিয়াঘাটা হেড কোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, বটিয়াঘাটা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং সরকারি ব্রজলাল কলেজ থেকে বাংলা সম্মান সহ এম এ পাস। কর্মজীবনে একজন গবেষক ও স্বনামধন্য অধ্যাপক। গবেষক হিসাবে যুক্ত ছিলেন এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ এর দুটি গবেষণার প্রজেক্টের সাথে। বর্তমানে কর্মরত আছেন বাংলা বিভাগের প্রভাষক পদে মোংলা উপজেলায় অবস্থিত মোংলা সরকারি কলেজ-এ ২০০২ সাল থেকে।
স্কুল জীবন থেকে কবিতা লেখার সূত্রপাত। কলেজে পড়াকালীন সময়ে কবিতা ও প্রবন্ধ রচনায় বেশকিছু পুরস্কার পান তিনি। এসময় বেশকিছু দৈনিক পত্রিকায়ও তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়। এছাড়া তাঁর লেখা কবিতার বই ও শিক্ষার্থীদের জন্য বইও প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে যুক্ত আছেন বিভিন্ন সৃজনশীল লেখা-লেখির সাথে। বেশি পছন্দ কবিতা পড়া ও লেখা। নদী, প্রকৃতি, ঋতুবৈচিত্র ও জীবনবোধের প্রকাশই তাঁর কবিতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।