জাগো নারী
– এস ইউ আহমেদ
নওতো তুমি তুচ্ছ কিছু,
থাকবে কেন থাকছো পিছু?
শক্তি তোমার নিতে হবে
জেগে ওঠো মা,
যে নরপশু জীব-জানোয়ার
ঝাঁপিয়ে পড়লে তোমার উপর,
প্রতিরোধ করতে তাকে হবে
ওদের ছেড়ে দিও না।
নারী বলে ভয় কেন হয়?
তোমায় সম্মান দিচ্ছে সবাই,
তোমার হাতে শক্তি আছে
দেখেছো ভেবে তা?
সৎ-অসৎ
– এস ইউ আহমেদ
চিনি লবন একই দেখতে
পার্থক্য হলো স্বাদে,
মানুষ অমানুষ এক চেহারা
বোঝা যায় কর্মভেদে।
ব্যবহারে হলো বংশের পরিচয়
সবার কাছে জানা,
নিজে পরিবর্তন না হলে কেহ
যায় না করে মানা।
আচরণে পরিবর্তন না হলে
সুশিক্ষিত নাহি হয়,
মুর্খ লোককে ভয় হয় যখন
অশ্লীল ভাষা কয়।
মুখের কথায় সৃষ্টি হয় বন্ধুত্ব
তাতেই শত্রুতা ঘটে,
মিথ্যা বলে প্রতারণার মাধ্যমে
সাময়িক ফায়দা লোটে।
দেখতে এক, তবে আচরণ ভিন্ন
করবো কারে বিশ্বাস?
হতাশার জাল বুনতেছি মনে
ভেঙে দিয়েছে আশ’!
পরোপকার পুণ্যের কাজ বটে
করছিলাম তাই ভেবে,
অকৃতজ্ঞ লোকের আচরণে
হৃদয় ভরেছে ক্ষোভে।
অসৎ রূপে হলো সততার হার
খারাপে ভালো ক্ষুণ্ণ,
প্রতারিত হয়ে ভয় পেয়েছে যে
কিভাবে করবে পুণ্য!
উভয় কার্যের লোক এক চেহারার
যায় না কভু চেনা,
ঠকার আগে না বুঝে করেছি
কতটা লেনা দেনা।
তরকারিওয়ালা
– এস ইউ আহমেদ
জীবিকার টানে নিয়ে এক ভ্যানে
কয়েক ধরণের তরকারি,
বৃষ্টি ঝরে তাই বাহিরে কেউ নাই
ছুটে চলে বাড়ি বাড়ি।
তরকারি লাগবে, কারো তরকারি?
ঝিঙা, পটল আর শশা,
এই শ্লোগানে আস্তে চলছে ভ্যানে
বিক্রি হবে মনে আশা।
বৃষ্টি হোক যত, হোক বৃষ্টির মত
থেমে থাকা হয়না কভু তার,
দূর্যোগের মাঝে বের হয় কাজে
আছে দারিদ্র্য এক পরিবার।
সে মানে না হার – রোদ, বৃষ্টি, ঝড়
হরতাল আর অবরোধ,
দায়িত্ব ভার নিয়ে কিছু অর্থ দিয়ে
করে দায়িত্বের পরিশোধ।
পরিবারের বোঝা মগজে ধারণ করা
তরকারির বোঝা আছে ভ্যানে,
কত বিক্রিতে কতটা লাভ হবে
ভাবতে থাকে তার মনে।
বাসায় খরচ আছে সে কথাও ভাবে
পুত্রেরও পড়াশুনা চলে,
মেয়েটা বড় হয়ে ঘরে আছে বসে
বিয়ের চিন্তা মাথায় দোলে।
সামান্য লাভ যা সংসারে খরচ হয়
সঞ্চয় নাই কোন টাকা,
একটা কিস্তি আছে দিলে সপ্তাহ শেষে
পকেটটা হয়ে যায় ফাঁকা।
দিন চলে যায় তবুও নাই মনে ভয়
ভালোই থাকে সর্বদা,
মনের মধ্যে বল প্রকাশে কলকল
ব্যবসায় তার সততা।
হারিয়েছি মন
– এস ইউ আহমেদ
আমি তার প্রেমে হারিয়েছি মন
তার ভাবনায় থাকি প্রতিক্ষণ,
ডুবে গেছি আমি প্রেম মোহনায়
হারিয়ে যাবো হয়তো জীবন।
আমি তার ভালোবাসায় জড়িয়েছি
তার রূপে এ মন ভরিয়েছি,
তাকে ছাড়া আমার চলে না যেন
তাই থাকি আমি কাছাকাছি।
তার কথার জাদুতে পাগল হলাম
তার সুর বাজে মোর মনে,
আমি তাকে চাই শুধু আর কিছু না
থাকিবো তার সাথে নির্জনে।
পেয়েছি যখন আমি তার ভালোবাসা
তাই হারাতে চাই না কখনো,
আমি তার হৃদয়ে হৃদয় মিলাতে চাই
সুর ও ছন্দে ভাসবো যেন।
তার আঁচলের ছোঁয়া লেগেছে গায়ে
পেয়েছি তার কেশের গন্ধ,
খুনসুটি হোক যত তার সাথে মোর
হয় না তার সাথে মোর দ্বন্দ্ব।
আমি চলে যাই তবু যাই না দূরে কভু
ফিরে আসি তার আশে,
ভালোবাসি আমি আমার মত করে
সেও আমাকে ভালোবাসে।
তাকে নিয়ে আমার সকল স্বপ্ন বুনি
কল্পনাতেও তার কথা শুনি,
তাকে ছাড়া আমার ভাবনাই ভুলেছি
সে আমার হৃদয়ের মনি।
তার ভাবনায় আমার ক্ষুধা হারিয়েছে
তার স্মৃতিতে আছি মশগুল,
আমার হৃদয় বাগানে সে হলো এমন
এক ফুটন্ত গোলাপ ফুল।
কবি পরিচিতি

এস ইউ আহমেদ। পুরো নাম মোঃ শাহাবউদ্দিন আহমেদ। জন্ম ১৯৮৭ সালে বরগুনার আমতলী উপজেলায়। ২০০৩ সালে আমতলী এম ইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে এসএসসি পাশ, ২০০৭ সালে পটুয়াখালী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ কম্পিউটার টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি হতে ২০১৬ সালে বি এস সি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং( সিএসই) এবং ২০১৭ সালে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি, কুষ্টিয়া হতে এম এস সি ইন সিএসই সম্পন্ন করেন। বর্তমানে বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট-এ টেকনোলজি ও কম্পিউটার প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত। গ্রামে বড় হলেও শহরে বেশি সময় কাটে এখন।
সাম্যবাদী কবি হিসাবে বাস্তব ও সাম্যবাদী বিষয় ও ভাবধারায় লেখালেখি করতে পছন্দ তাঁর। ছোট গল্পও লিখে থাকেন কবিতার পাশাপাশি। কবিতার প্রেমে পড়েই তাঁর কবিতা লেখার শুরু এবং এখনো কবিতা লিখতে ভালোবাসেন কাব্য প্রেমের লাবণ্য ও সৌন্দর্য সাধনায়।