ফাগুন রাতের চাঁদ
– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ
নীল আকাশের মিষ্টি মেয়ে
ফাগুন রাতের চাঁদ,
আমার সাথে ঘর বাঁধিবার
তোমার কেন সাধ?
তুমি থাকো দূর নীলিমায়
আমি থাকি ধুলির ধরায়
কেমন করে মিটাবোবলো
তোমার মনের সাধ?
নীল আকাশের মিষ্টি মেয়ে
ফাগুন রাতের চাঁদ।
কথা দিলাম নিঝুম রাতে
থাকবো তোমার ধ্যানে,
ডাকলে তুমি যাবো আমি
তোমার ফুল বনে।
বইবে প্রেমের মাতাল ঢেউ
দেখবে না কেউ, জানবে না কেউ।
তখন তুমি নিয়ো লুটে
একটি চুমুর সাধ।
নীল আকাশের মিষ্টি মেয়ে
ফাগুন রাতের চাঁদ।
ঝড়ের হাওয়া
– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ
মধ্য রাতের ঝড়ের হাওয়া
দীপ নিভিয়ে দিলে
জানি তুমি বসতে আমায়
রাখবে আচল মেলে।
দু’চোখ তখন মুছবে হাতে
আসবে না ঘুম কোনও মতে,
পড়বে মনে বকুল তলে
কী কথাটি দিলে।
মধ্য রাতের ঝড়ের হাওয়া
দীপ নিভিয়ে দিলে।
দোরের কড়া ঝড়ের হাওয়ায়
যেমনি নাড়বে এসে
অমনি তুমি বিছান ছাড়ি
দাঁড়াবে দোর পাশে।
ভাববে মনে আসছে বুঝি
বন্ধু আমার সময় খুঁজি।
আস্তে করে খোলবে দোর
কেউ না জেনে ফেলে।
মধ্য রাতের ঝড়ের হাওয়া
দীপ নিভিয়ে গেলে।
হাতড়ে আঁধার বিফল হয়ে
ব্যথা ভরা বুকে
যেমনি তুমি ধীর পায়ে
ফিরবে খাটের দিকে।
ঝোড়ো মেঘ অমনি ডেকে
হয়তো বলবে চিনি তাকে।
আসবে না সে যারে আশাতে
দোর দিলে খুলে।
মধ্য রাতের ঝড়ের হাওয়া
দীপ নিভিয়ে গেলে।
শেষ মিনতি
– শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ
কবে কোথায় দেখা হলো
চলতি পথে সেই,
এখনও কি গাঁথো মালা
আমার আশাতেই?
বলতে গিয়ে রাঙলে মুখ
ফিরবে কবি কবে,
তোমার সাথে এমনি করে
আর কি দেখা হবে?
দোহাই তোমার মান করো না
আমি যে এক নারী,
মনের কথা কেমন করে
মুখে বলতে পারি।
চাওনা আমার আঁখির পানে
কী কথা সে বলে,
আঁখির ভাষা বুঝে আমায়
নেও না বুকে তুলে।
এই জনমে না হয় যদি
পর জনম পেয়ে
সারা জনম কাটিয়ে দেবো
তোমার পথ চেয়ে।
তোমার পায় বিলিয়ে দেবো
আমার যাহা সবি
হাশর শেষে ভুলো না আমায়
মনে রেখো কবি।
এবার আমার শেষ মিনতি
কবি তোমার তরে,
আপন হাতে একটি ফুল
দিও গরিব গোরে।
কবি পরিচিতি

শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ। জন্ম অক্টোবর ২৭, ১৯৫৩ সালে বাগেরহাট জেলার মিঠাখালী গ্রামে। পিতা খাদেম আলী শেখ ও মাতা জয়নাব বেগম। মোংলা উপজেলার টাটিবুনিয়া স্কুল থেকে ১৯৬৮ সালে মাধ্যমিক এবং ১৯৭০ সালে বাগেরহাট সরকারি পি সি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ।
সহজ ও সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত এক বাউল কবি তিনি – কবির চিত্ত কাব্য সাধনার অনন্য এক ভূমি। তাই কিশোর বয়স থেকে যে লেখালেখির শুরু, জীবনের সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসে এখনো তাঁর কাব্য সাধনা চলেছে অক্লান্তভাবে। তাঁর লেখার মধ্যে প্রেম ও প্রকৃতিই প্রধান্য পেয়েছে সব সময়। ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে কয়েকটি কবিতার বই এবং দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সাময়িকীতে স্থান পেয়েছে তাঁর অনেক কবিতা। (মোবাইল – ০১৩২ ৯৭৩ ০০৯)