বাসুদেব পাল – বর্ষার ছড়া

ঘনঘোর বর্ষায়

– বাসুদেব পাল

ঝম ঝম বৃষ্টি
কি যে লাগে মিষ্টি,
বৃষ্টির সৃষ্টি
জলভরা মাঠটি।

মেঘ করে গর্জন
সাথে সাথে বর্ষণ,
এই ক্ষণে কার মন
কারে করে অর্পণ!

মেঘ ডাকে মেঘ ডাকে
সাথে কোলা ব্যাং হাঁকে,
বর্ষার ফাঁকে ফাঁকে
মন তার ছবি আঁকে ।

ঘনঘোর বর্ষায়
মন যেন কারে চায়,
কার নাম বলে যায়
অনুভবে বোঝা যায়।

বর্ষায় বিরহিনী

– বাসুদেব পাল

আকাশের হলো কি যে,
বুকে কার ব্যাথা বাজ ,
কোন বিরহের ফলে
ভেসে যায় আঁখিজলে।

মেঘে মেঘে ঘর্ষণ,
রাত ভর বর্ষন
একা বিরহিনী মন,
যেন খুব উচাটন।

কত কথা মনে ভাসে,
কিছু যায় , কিছু আসে,
কিছু কথা যায় মিশে,
হৃদয়ের তলদেশে।

বিরহিনী দু’টি আঁখি,
ঘুমহীন দুই পাখি,
বুকে বেঁধা বিষ তীর,
খুঁজে ফেরে নিজ নীড়।

বিরামহীন বর্ষণ,
রাত ভর জাগরণ,
কেন জানি অকারণ
তারে শুধু চায় মন।

অন্তরের কন্দরে,
বেঁধে নেয়া যায় যারে,
তার বাঁশি রোজ বাজে
হৃদয়ের ভাঁজে ভাঁজে।

বর্ষার ছড়া

– বাসুদেব পাল

শ্রাবণের বর্ষা,
নেই কোন ভরসা,
আকাশটা ফর্সা?
শুধু মিছে আশা।

পাতি হাঁস দলে,
চলে হেলেদুলে,
বর্ষার জলে,
নব হিল্লোলে।

বিল জলে ভরা,
অধরা মাছেরা
পেয়ে বারিধারা –
হলো বাঁধাহারা।

চঞ্চল প্রাণ
মানেনা বারণ,
বৃষ্টি স্নান –
চলে অকারণ।

রাস্তাটা ফাঁকা,
ঘোরেনাতো চাকা,
শূন্য এলাকা,
যেন ছবি আঁকা ।
বৃষ্টি বেলায়,
কাটেনা সময়,
দু’আঁখি কোনায়,
স্মৃতি আসে যায়।


কবি পরিচিতি

বাসুদেব কুমার পাল। জন্ম রামপাল উপজেলার বড়দিয়া গ্রামে ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে, পিতা মণিদ্রনাথ পাল ও মাতা সরোজিনী পাল। বি, এসসি(অনার্স) ও প্রাণিবিজ্ঞানে এম,এসসি ডিগ্রী অর্জনের পর এখন আমড়াতলা চাঁপড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে এখন কর্মরত। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত – স্ত্রী লাবনী পাল এবং বাণী ও বর্ণ নামে দুই সন্তানের জনক।

ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখির শুরু। ছাত্রজীবনেই খুলনার বিভিন্ন দৈনিকে অনেক কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে খুলনার দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে কবির কবিতা। এছাড়া তিনি উপন্যাসও লিখে থাকেন। – এ পর্যন্ত প্রকাশিত উপন্যাস একটি – স্বপ্নের মৃত্যু, অপ্রকাশিত উপন্যাস চারটি। তিনি আরো লিখেছেন ছোট গল্প ও ছোটদের জন্য ছড়া এবং রচনা করেছেন আধুনিক গান। শখের বসেই তার লেখালেখি, অবসর কাটে লিখে ও বই পড়ে। কবির লেখার ভিতর সম-সাময়িক বিষয় ও প্রকৃতিই প্রধান্য পায় বেশী।