পেত্নির কান্না
– বাসুদেব পাল
টিপ টিপে বৃষ্টি ,
মেঘ ভরা আকাশে,
বাঁশ ঝাড়ে এলো ভুত
দক্ষিণা বাতাসে।
ভুত এলো দলে দলে
ফাঁকা নেই বাঁশ,
দোল খায় বাঁশ ধরে
মুখে খায় হাঁস।
মেছো ভুত মাছ ধরে
বৃষ্টির জলে,
গেছো ভুত গাছে ওঠে
গাছ ওঠে দুলে।
মাঝ রাতে কি যে হলো
কিচ কিচ শব্দ,
বাঁশ ঝাড়ে প্যাচে পড়ে
পেত্নি যে জব্দ।
কে আছে এ ভুতকুলে
পেত্নিকে বাঁচাবে,
পেত্নির চুল থেকে
বাঁশঝাড় ছাড়াবে।
কেউ নেই কেউ নেই
পেত্নির কান্না,
সে থেকে এ বাঁশ ঝাড়ে
ভুত দলে আর না।
শনিবারের রাত
– বাসুদেব পাল
শনিবারে মধ্যরাতে
ভুত ঢুকেছে খোকার ঘরে,
খোকা তখন চুপটি করে ,
ডুবে ছিল ঘুমের ঘোরে।
ঘুম ভেঙ্গে যায় হঠাৎ করে
ঢং ঢং ঢং শব্দ শুনে,
কারা যেন জোরে জোরে
করছে আঘাত ঘরের টিনে।
খোকন ভাবে, ভুতরা যতই
করুক হরেক শব্দ,
শাস্তি দিয়ে আজকে তাদের
করবে ঠিকই জব্দ।
আলো জ্বেলে দেখবে খোকা
সকল ভুতের মুখ,
বুঝবে তখন খোকন সোনার
ঘুম ভাংগানোর দুখ।
এই না ভেবে খোকন সোনা
যেই জ্বেলেছে আলো,
ডজন খানেক ধেড়ে ইঁদুর
ছুটলো এলো মেলো।
ভুতের মেলা
– বাসুদেব পাল
জমছে ভালো ভুতের মেলা ,
ভুতের মেয়ে ভুতের পোলা,
লক্ষ ভুতে করছে খেলা,
দেখবি নাকি আয়।
কেউ চড়েছে নাগর দোলা,
নাকি ভুতের লম্বা ঝোলা,
ভর্তি তাতে কোর্মা পোলা’
দশ ভুতে তা খায়।
মধ্য গাঁয়ের তালতলায় ,
আজকে ভুতের এই মেলায় ,
সকল ভুতে মন ভোলায় ,
নাচের তালে তালে।
পেত্নি নাচে চুল খুলে ,
উর্দ্ধে দুটি হাত তুলে ,
রূপসী সে ভুত কুলে
গৌরবে তার বুক ফুলে।
ভুতের বাপের শ্রাদ্ধ
– বাসুদেব পাল
ভুতের বাপের শ্রাদ্ধ হবে
তেঁতুল গাছের তলে,
খবর পেয়ে ভুতেরা সব
আসছে দলে দলে।
নাকি ভুত আর গেছো ভুতে
আসছে উড়ে উড়ে,
মেটে ভুতে আসবে নাকি
অনেক মাটি ফুঁড়ে।
পাঁচি পেঁত্নির ছুঁচো বাচ্চা
আজ ধরেছে বায়না,
মরা পচা পশুর মাথা
কখন হবে রান্না।
ভুতের বাপের শ্রাদ্ধ হবে
ভুতরা দারুণ খুশি,
অনেক পরে আজকে সবাই
গিলবে বেশি বেশি।
পচা কুকুর বেড়াল ছানা
আস্ত পচা মানুষ,
এক গ্রাসে গিলবে সবাই
করবে হাপুস হুপুস।
কবি পরিচিতি

বাসুদেব কুমার পাল। জন্ম রামপাল উপজেলার বড়দিয়া গ্রামে ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে, পিতা মণিদ্রনাথ পাল ও মাতা সরোজিনী পাল। বি, এসসি(অনার্স) ও প্রাণিবিজ্ঞানে এম,এসসি ডিগ্রী অর্জনের পর এখন আমড়াতলা চাঁপড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে এখন কর্মরত। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত – স্ত্রী লাবনী পাল এবং বাণী ও বর্ণ নামে দুই সন্তানের জনক।
ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখির শুরু। ছাত্রজীবনেই খুলনার বিভিন্ন দৈনিকে অনেক কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে খুলনার দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে কবির কবিতা। এছাড়া তিনি উপন্যাসও লিখে থাকেন। – এ পর্যন্ত প্রকাশিত উপন্যাস একটি – স্বপ্নের মৃত্যু, অপ্রকাশিত উপন্যাস চারটি। তিনি আরো লিখেছেন ছোট গল্প ও ছোটদের জন্য ছড়া এবং রচনা করেছেন আধুনিক গান। শখের বসেই তার লেখালেখি, অবসর কাটে লিখে ও বই পড়ে। কবির লেখার ভিতর সম-সাময়িক বিষয় ও প্রকৃতিই প্রধান্য পায় বেশী।