ব্যায়াম শারীরিক সুস্থতা ও সার্বিক স্বাস্থ্য এবং রোগমুক্ত অবস্থা বজায় রাখতে বা বৃদ্ধিতে বহুলাংশে ভূমিকা রাখে। ব্যায়ামের জন্য তেমন কোন বয়সের সীমা নেই। প্রাপ্তবয়স থেকে শুরু করে বার্ধক্য পর্যন্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কমপক্ষে সকাল-সন্ধ্যা ২ বার ব্যায়াম করা প্রয়োজন। এটি দেহ ও মনকে সতেজ ও বলবান রাখে এবং পাশাপাশি শারীরিক সুস্থতায় অবদান রাখে। ব্যায়াম ইমিউন সিসটেমের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। নিচেয় ব্যায়ামের কিছু সুফল তুলে ধরা হলো –
১। মানবদেহে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়।
২। রোগ-বালাই কমিয়ে আয়ুষ্কাল বাড়িয়ে দেয়। সচলতা বজায় রাখে।
৩। নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের চর্বির আধিক্য বা বাড়তি চর্বি কমায়।
৪। যারা উচ্চরক্তচাপে ভোগেন, নিয়মিত ব্যায়াম তাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে।
৫। শারীরিক ব্যায়াম টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
৬। কিছু ক্যানসার, যেমন ক্যানসার কাকেক্সিয়া, ব্রেস্ট ক্যানসার, কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
৭। পেশিকে সবল করে। হাড়ের গঠনকে শক্তিশালী গড়ে তোলে।
৮। যারা দীর্ঘসময় ধরে মাংশপেশি ও সন্ধি বা হাড়ের ব্যথায় ভোগেন, ব্যায়াম দ্বারা সেই ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
৯। হৃদরোগ বা হৃৎপিন্ড ও রক্তনালীর অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। হৃৎপিন্ডকে সবল রাখে।
১০। ভাইরাসের আক্রমন থেকে দেহকে সুরক্ষিত করে।
১১। মানসিক অবস্থার উন্নতি করে। মানসিক চাপ ও মন-মরা ভাব দূর করে।
১২। স্মরন শক্তির বৃদ্ধি ঘটায়।
১৩। রোগ প্রতিরোধে ইমিউন সিসটেমের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
তবে লক্ষ্য রাখতে হবে ব্যায়াম যে অতিমাত্রায় না হয়ে যায়। অতিমাত্রায় ব্যায়াম আমাদের ক্ষতিও করতে পারে। যেমন যথোচিত বা মানানসই বিশ্রাম ছাড়া কেউ ব্যায়াম করলে রক্তসঞ্চালনজনিত সমস্যা যেমন স্ট্রোক (stroke) এর সম্ভাবনা বাড়ে। দীর্ঘ সময় ধরে অতিমাত্রায় কার্ডিওভাসকুলার একসারসাইজ হার্টবলিয়াম (লেপ্ট ও রাইটভেনট্রিকল) বাড়িয়ে দেয়, ভেন্ট্রিকল ওয়ালের ঘনত্ব বাড়িয়ে দেয় যার ফলে হৃদপ্রাচীরে মায়োকার্ডিয়াল কোষের ক্ষতি ঘটে।
ঠিকভাবে ব্যায়ামের নিয়মাবলী জানা থাকলে শারীরিক ব্যায়ামের অপকারিতা বলে কিছুই থাকে না। তাই নিয়ম মেনে সঠিকভাবে ব্যায়াম করার দিকে সকলের সচেষ্ট হওয়া দরকার।