করোনাকালের জীবনধারা

স্বাভাবিক চলমান জীবনে হঠাৎ ছন্দ পতন ঘটিয়েছে করোনা। বলতে গেলে বলা যায় সব কিছু ওলোট পালোট হয়ে গিয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা এবং লক ডাউন ইতাদি নিয়ম-কানুন ব্যক্তিগত জীবন এবং সামাজিক জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমুল পরিবর্তন এনেছে। চিরাচরিত প্রথা বা নিয়মানুবর্তিতার ওপর আঘাত অনেক মানুষকে চমকে দিয়েছে। ধর্মীয় আচার-আচরণেও নিয়মের হেরফের হচ্ছে। – মসজিদ-মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডাসহ বিভিন্ন উপসনালয়ের উপসনায় ঘটেছে নিয়মের ব্যত্যয়।

প্রথম প্রথম এমন আইন মানতে অনেকেই অনীহা প্রকাশ করে ছিলো। তাদের ধারণা ছিলো করোনা তাদের কিছু করতে পারবে না এবং তারা এর বিপদ সম্পর্কে তেমন গুরুত্ব প্রদান করেনি।

করোনা মোকাবেলায় এখন অনেক দেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে লকডাউন পালন করেছেন ও কোয়ারেন্টাইনে দিনাতিপাত করেছেন। কেউ কেউ আবার আইসোলেশনে থেকেছেন। অফিস আদালত, উড়োজাহাজ, রেলগাড়ি, বাস, মোটর গাড়ি ইত্যাদি সব ধরণের যানবাহনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিলো। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং অনলাইনে ক্লাস শুরু হয় অনেক স্থানে। শপিংমল, দোকানপাট সবই বন্ধ রাখা হয়।

চলমান জীবন যাত্রায় হঠাৎ করে এই ছন্দপতন হওয়ায় তা মেনে নিতে অনেকেরই বহু কষ্ট হয়েছে এবং হচ্ছে। বিশেষত যারা গরীব ও দিন মজুর তাদের অবস্থা খুবই শোচনীয় – কাজ কর্ম না থাকায় অর্থনৈতিক দূর্দশা ও খাদ্যাভাবের মধ্যে তাদের দিন কাটছে। সরকারি, বেসরকারি ও সমাজের বিত্তবান মানুষের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপর্যাপ্ত। অন্যদিকে যারা বয়স্ক অথবা নানা রোগব্যধিতে আক্রান্ত, তাদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বেশী। কারো করোনা হয়েছে জানতে পারলে তাদের অনেকে আবার নিগ্রহের শিকার হচ্ছে।

এখনো পর্যন্ত করোনার দাপট প্রচন্ড। ভ্যাকসিন ও প্রতিষেধক আবিস্কারের দিকে সারা বিশ্ব তাকিয়ে রয়েছে। এখনো পর্যন্ত গবেষণা ও পরীক্ষা নিরিক্ষার পর্যায়ে রয়েছে এই সব আবিস্কার। তবে অনেক অগ্রগতি ও সম্ভাবনা অর্জিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করোনার ভ্যাক্সিন ও প্রতিষেধক খুব শীঘ্র প্রয়োজন।